রাফির বুক চিতিয়ে দাঁড়ানোয় বদলে যায় আন্দোলনের গতি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফির একা দাঁড়িয়ে থাকা সেই সাহসিক মুহূর্তটি বদলে দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গতিপথ। ২০২৪ সালের ১১ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর রাজপথে পুলিশের লাঠিচার্জের মুখে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন প্রাণসঞ্চার করে রাফির দাঁড়িয়ে থাকা ভিডিও। মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ভাইরাল হয়ে যায় এবং আন্দোলন পায় নতুন গতি।

রাফি তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক। নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের ছেলে রাফি সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘সেদিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, হয় মরব না হয় রাজপথে থাকব। পচে যেতে চাইনি। যখন দেখি কেউ নেই, তখন একাই দাঁড়িয়ে গেলাম। পরে দেখি শত শত, তারপর হাজার হাজার শিক্ষার্থী আমার পেছনে দাঁড়িয়েছে। তখন আবার আমরা আন্দোলন শুরু করি।’

চট্টগ্রামের বটতলী রেলস্টেশন থেকে টাইগারপাস হয়ে ২ নম্বর গেট পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মিছিল পৌঁছাতেই পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দিক ছুটতে থাকেন। আন্দোলন থেমে গেছে বলে অনেকেই ধরে নেন। ঠিক সেই সময় ফাঁকা রাজপথে বুক চিতিয়ে একা দাঁড়িয়ে যান রাফি। তার সাহসিকতা দেখে শিক্ষার্থীরা ফিরে আসেন রাজপথে, মিছিল আবার জমে ওঠে।

রাফি বলেন, ‘সেদিনের পর থেকে শিক্ষার্থীরা বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে শিখেছে। ভয় কেটে গেছে। সবাই মরতে প্রস্তুত ছিল। রংপুরের আবু সাইদ থেকে শুরু করে দেশজুড়ে শিক্ষার্থীরা একের পর এক রাজপথে দাঁড়িয়ে যান।’

সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজপথে নামেন অসংখ্য শিক্ষার্থী। নতুন করে তারা আন্দোলনে জোরদার অংশগ্রহণ শুরু করেন। প্রশাসন ও শাসকদলের বুকে কাঁপন ধরানো রাফির একা দাঁড়িয়ে থাকা দৃশ্য হয়ে ওঠে প্রতিবাদের প্রতীক।


পিএ/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ছোট দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দিলে বড় দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয় না : দুদক কমিশনার Oct 13, 2025
img
ফিক্সিং সন্দেহে থাকা ক্রিকেটারদের বাদ রাখা হচ্ছে বিপিএল ড্রাফট থেকে : ইফতেখার রহমান মিঠু Oct 13, 2025
img
পুঁজিবাজারে সূচক বেড়ে চলছে লেনদেন Oct 13, 2025
img
অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ৩টি ঐতিহাসিক মাইলফলক ছোঁয়ার দ্বারপ্রান্তে বিরাট কোহলি Oct 13, 2025
img
রাজধানীর এক থানায় একদিনে গ্রেপ্তার ২৬ Oct 13, 2025
img
নাশকতার মামলায় অব্যাহতি পেলেন মির্জা আব্বাস দম্পতি Oct 13, 2025
img
ঢাকা কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ধস্তাধস্তি Oct 13, 2025
img
হাসিনাসহ ৩ আসামির বিরুদ্ধে চলছে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন Oct 13, 2025
img
রঙিন ফুল, হাসি আর শাড়িতে অনিন্দ্য জয়া আহসান Oct 13, 2025
img
মালদ্বীপে অবৈধ ব্যবসা,আটক ৬ প্রবাসী Oct 13, 2025
img
২য় দিনের মতো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা Oct 13, 2025
img
আজ বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দল নামছে এশিয়ান কাপের টিকিটের লড়াইয়ে Oct 13, 2025
img
দেশের পরিস্থিতিটা খুব একটা শান্তিপূর্ণ নয় : জিল্লুর রহমান Oct 13, 2025
img
রাজধানীতে শ্রমিক লীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৫ Oct 13, 2025
img
চট্টগ্রাম ছাড়া কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই : আবহাওয়া অধিদপ্তর Oct 13, 2025
img
ফ্রান্সের জাতীয় দলের কোচ হতে চান জিদান Oct 13, 2025
img
গাজা শান্তি সম্মেলনে যোগ দেবে না ইরান Oct 13, 2025
img
জাতীয় দলে সুযোগ না পেলেও চিন্তিত নন চ্যাম্পিয়ন আকবর আলী Oct 13, 2025
img
ট্রাম্পকে সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা দেবে ইসরাইল: আল জাজিরা Oct 13, 2025
img
কুদুসের জাদুতে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল ঘানা Oct 13, 2025