কান্তারা ছবির গর্জনময় সাফল্যের পর নতুন স্বপ্ন বুনছেন ঋষভ শেঠি। দক্ষিণ ভারতের এই পরিচালক এবার শুধু একটি নয়, একে একে পাঁচটি বিশাল প্রকল্পে হাত দিচ্ছেন। তার লক্ষ্য দেশের প্রাচীন ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিক উপাখ্যানকে নতুন আলোয় তুলে ধরা, যেন ভারতীয় মহাকাব্যের সিনেমায় রূপান্তর ঘটে এক নবজাগরণে।
কান্তারার আধ্যাত্মিক ছোঁয়া দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও এবার তিনি পুরো ভারতকে এক সূত্রে বাঁধার পরিকল্পনা করছেন। এই পরিকল্পনার নাম পাঁচ পর্বের এক ব্যতিক্রমী রূপকথা, যেখানে থাকবে পৌরাণিক চরিত্র, বিপ্লবের ইতিহাস, এবং রাজাদের গৌরবগাথা। শীর্ষ প্রযোজনা সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় আগামী পাঁচ বছরে এই ছবিগুলো মুক্তি পাবে পর্যায়ক্রমে।
প্রথম ছবিটি 'কান্তারা চ্যাপ্টার ১', যা ২০২২ সালের ব্লকবাস্টারের আধ্যাত্মিক প্রিকুয়েল হিসেবে আসছে। ২০২৫ সালের ২ অক্টোবর ছবিটি মুক্তি পাবে, পরিচালনা করবেন ঋষভ শেঠি নিজেই, প্রযোজনা করছে হোমবালে ফিল্মস। বলা হচ্ছে, এ ছবি দর্শকদের আরও গভীরতর গ্রামীণ সংস্কৃতি আর আধ্যাত্মিক আখ্যানের জগতে নিয়ে যাবে।
দ্বিতীয় প্রকল্প 'দ্য প্রাইড অফ ভারত: ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ'। এই ছবিতে পুনরায় জীবন্ত হবে মারাঠা বীরের বীরত্বগাথা। ২০২৭ সালের জানুয়ারিতে আসছে এই বড় মাপের ইতিহাসনির্ভর সিনেমা, পরিচালনা করবেন সন্দীপ সিং। শিবাজির শৌর্য আর রাষ্ট্রগঠনের কাহিনি এ প্রজন্মের কাছে নতুন করে তুলে ধরা হবে।
তৃতীয় ছবি '১৭৭০', যার অনুপ্রেরণা বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’। ছবির কেন্দ্রে সন্ন্যাসী বিদ্রোহ, যাকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরুর অধ্যায় বলা হয়। পরিচালনা করবেন অশ্বিন গঙ্গারাজু, প্রযোজনা করছে সিতারা এন্টারটেইনমেন্টস। এই ছবি বাঙালিরও বিশেষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে।
চতুর্থ প্রকল্প 'শ্রী কৃষ্ণদেবরায় বায়োপিক'। বিজয়নগর সাম্রাজ্যের প্রতাপশালী সম্রাটের জীবনের মহাকাব্যিক কাহিনি বড় পর্দায় তুলে আনতে পরিচালক আশুতোষ গোয়ারিকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন প্রযোজক বিষ্ণু বর্ধন ইনডুরি। এ ছবি ভারতের দক্ষিণের ইতিহাস ও শিল্প-সংস্কৃতিকে নতুন রূপে তুলে ধরবে।
সবশেষে 'জয় হনুমান' এক পৌরাণিক অধ্যায়, যেখানে ঋষভ শেঠি স্বয়ং এক দেবতুল্য রূপে অবতীর্ণ হবেন। এই ছবিটি 'হনু-ম্যান' ইউনিভার্সের অংশ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রযোজনায় মৈথ্রি মুভি মেকার্স। বলা হচ্ছে, এ ছবি দর্শককে এক অতিমানবীয়, আধ্যাত্মিক জগতে ভ্রমণ করাবে।
ঋষভ শেঠির এই পরিকল্পনা শুধু চলচ্চিত্র বানানো নয়, বরং দেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও পৌরাণিক গল্পগুলোকে নতুন ভাষায় বলা। প্রতিটি ছবি তৈরি হবে পরিশ্রম, গবেষণা আর শৈল্পিক মমত্ববোধ নিয়ে। তিনি চান, ভারতীয় সিনেমা কেবল বিনোদন নয়, উত্তরাধিকারের বর্ণময় আখ্যান হয়ে উঠুক, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে যাবে।
কেএন/এসএন