ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ধবলধোলাই হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে সবচেয়ে বড় লজ্জার ব্যাপার হচ্ছে, সিরিজের তিনটি ম্যাচই শেষ হয়েছে তিন দিনের মধ্যে। তবে আরও লজ্জার ব্যাপার হচ্ছে, কিংস্টনে ১৪.৩ ওভারেই মাত্র ২৭ রানে গুটিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ! যা টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ।
১৯৫৫ সালে মাত্র ২৬ রানে অলআউট হয়েছিল নিউজিল্যান্ড, মাত্র ১ রানের জন্য লজ্জার এই রেকর্ড থেকে কোনোমতে বেঁচে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর আগে অবশ্য ২০০৪ সালে ৪৭ রানে অলআউট হয়েছিল উইন্ডিজ। এবার সেটিকেও ছাড়িয়ে গেল ক্যারিবীয়রা।
অন্যদিকে এই প্রথমবার টেস্টের এক ইনিংসে কোনো দলের ৭ ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন শূন্য রানে। প্রথম ছয় ব্যাটসম্যান মিলে করেছেন মাত্র ৬ রান, এটাও অবশ্য একটা বিব্রতকর রেকর্ড!
এই চরম হতাশাজনক পারফরম্যান্স দেখে নড়েচড়ে বসেছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই), ডেকেছে এক জরুরি বৈঠক। সেই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের তিন কিংবদন্তি- ক্লাইভ লয়েড, স্যার ভিভ রিচার্ডস ও ব্রায়ান লারাকে। সঙ্গে আরও থাকছেন শিবনারায়ণ চন্দরপল, ডেসমন্ড হেইন্স ও ইয়ান ব্র্যাডশ। তারা সবাই মিলে ‘ক্রিকেট স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অফিশিয়েটিং কমিটি’-তে বসে সাম্প্রতিক এ ব্যর্থতার পর্যালোচনা করবেন, এবং বিভিন্ন পরামর্শও দেবেন।
তবে শুধু যে লোক দেখানো জন্য এই কিংবদন্তিদের ডাকা হয়নি, এটাও স্পষ্ট করেছেন সিডব্লুআই সভাপতি কিশোর শ্যালো। ‘তারা আমাদের সোনালি যুগের গর্ব, যাদের হাতে তৈরি হয়েছিল দুর্দান্ত দল। তাদের অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের দারুণভাবে সাহায্য করবে। এই আলোচনার লক্ষ্য বাস্তব পরিকল্পনা বের করে আনা।’
শ্যালো আরও বলেছেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটপ্রেমীদের মতো আমিও এই হারের যন্ত্রণা গভীরভাবে অনুভব করেছি। আমাদের সামনে কিছু নিদ্রাহীন রাত অপেক্ষা করছে, খেলোয়াড়দের জন্যও। এই পরাজয়ের ভার ওদের ওপরই সবচেয়ে বেশি।’
একই সঙ্গে শ্যালো আহ্বান জানিয়েছেন সবাইকে ধৈর্য ধরারও। ‘আমরা যেন এটাকেই সবকিছুর শেষ ধরে না নিই। এখন সময় নতুন করে (দল) গঠনের। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর আমাদের বিনিয়োগ করতে হবে, আর সেই পুরনো ক্যারিবিয়ান স্পিরিটকে আবারও জাগিয়ে তুলতে হবে।’
এই সংকটময় সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন শ্যালো। ‘এটা কোনো বিভক্তির সময় নয়। খেলোয়াড়, কোচ, ভক্ত, সাবেক কিংবদন্তি, প্রশাসক- সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে এগোতে হবে। অনেক কিছু করার বাকি, কিন্তু সেটা করতে হবে লক্ষ্য ঠিক রেখে, সম্মিলিতভাবে।’
২১ জুলাই থেকে শুরু হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এরপর আগস্টে ঘরের মাঠে সাদা বলের সিরিজ খেলবে উইন্ডিজ।
ইউটি/টিএ