রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে জ্বালানি তেলের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব রাশিয়ায় পড়বে না বলে জানিয়েছেন ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। এর মধ্যেই অব্যাহত রয়েছে দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলা।
এদিকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় আরও গতি আনা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার এই মন্তব্যে সমর্থন জানিয়েছে মস্কোও।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনীয় প্রতিরোধের মধ্যদিয়ে তা রক্তক্ষয়ী সংঘাতে রূপ নেয় যা গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে অব্যাহত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের হিসেব অনুযায়ী, এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে উভয়পক্ষের অন্তত ১২ লাখ মানুষ হতাহত হয়েছে।
এই যুদ্ধের শুরু থেকেই শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করছে ইইউ। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৮তম নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ ঘোষণ করেন ইইউ’র পররাষ্ট্র বিভাগের শীর্ষ নির্বাহী কাজা কালাস।
অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য একসঙ্গে রাশিয়ার তেলের মূল্যসীমা কমিয়ে ৪৭.৬০ ডলারে নামিয়েছে। যা বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে গড়ে ১৫ শতাংশ কম।
এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রাশিয়ার আয়ের ওপর আরও চাপ বাড়াতে চায় পশ্চিমা জোট। রুশ অর্থনীতি নিয়ে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ক্রেমলিন জানায়, তারা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজকে অবৈধ বলেও অভিহিত করেছে মস্কো।
এদিকে সামরিক মঞ্চে এখনও অব্যাহত রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষ। ইউক্রেনের কামিয়ানস্কে, দেহতিয়ারনে আর পোপিভ ইয়ার দখলের দাবি করে রাশিয়া। একইসঙ্গে ক্রিমিয়া, ব্রায়ানস্ক আর মস্কোসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৭৩টি ইউক্রেনীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করার কথা জানায় মস্কো।
ফ্রন্টলাইনে পরীক্ষামূলক অস্ত্র ব্যবহারে সবুজ সংকেত দিয়েছে ইউক্রেন। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী তারা ইউক্রেনীয় ড্রোন কিনতে পারে। যার বিনিময়ে কিয়েভ যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করবে। নিজস্ব অস্ত্র উৎপাদনও ৪০ থেকে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর সিদ্ধান্তের সরাসরি সমালোচনা করেছে মস্কো। পাশাপাশি রুশ পার্লামেন্ট একটি বিল পাস করেছে। যেখানে ইউক্রেনের পক্ষে গান, পোস্ট কিংবা কন্টেন্ট প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিধান রাখা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ঘোষণা দিয়েছেন, দ্বিতীয় ইস্তাম্বুল বৈঠকের চুক্তি বাস্তবায়নে গতি আনতে হবে। তার কথায়, ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় পূর্ণ সমন্বয় জরুরি। ক্রেমলিন জানায়, শান্তি আলোচনায় আরও গতি আনার ব্যাপারে জেলেনস্কির বক্তব্যের সঙ্গে একমত তারা।
টিকে/