সিঙ্গেল স্ক্রিনের যুগে বলিউডের রাজা ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। একের পর এক হিট ছবি, নিজস্ব শুটিং সেটআপ, আর দর্শকনন্দিত উপস্থিতি—এই সব মিলিয়ে একটা আলাদা ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করে ফেলেছিলেন তিনি, উটির পাহাড়ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে।
এই নিয়েই সম্প্রতি নেটপাড়ায় শুরু হয়েছে চর্চা। বিহারের রূপবাণী সিনেমা হলের কর্ণধার বিশেক চৌহান এক পডকাস্টে বলেন, “মিঠুন চক্রবর্তী ছিলেন আমাদের লাইফলাইন। তখনকার দিনে উনিই ছিলেন আমাদের সব কিছু!”
আজকের ঝাঁ চকচকে মাল্টিপ্লেক্স আর ওটিটির যুগের বহু আগের গল্প এটি। তখন সিঙ্গেল স্ক্রিনই ছিল বিনোদনের মূল মাধ্যম। আর সেখানেই রাজত্ব করতেন মিঠুন। বিশেষ করে বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের বহু শহরে মিঠুনের সিনেমা মানেই ছিল ‘হাউজফুল’।
বিশেকের দাবি, “একটা সময় ছিল, যখন মিঠুনদা প্রতি মাসে দুটো করে ছবি দিতেন দর্শককে। আর প্রত্যেকটাতেই ওপেনিং হতো ১০০% হাউসফুল!”
মিঠুন নিজের ক্যারিয়ারে এমন পরিকল্পনা করেছিলেন যাতে তার ইন্ডাস্ট্রির ওপর সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ থাকে। সে কারণে বহু সিনেমার শুটিং হতো উটিতে—যেখানে তিনি নিজেই একটি হোটেল কিনে তা শুটিং স্পট হিসেবে ব্যবহার করতেন।
বিশেক চৌহান বলেন, “ছবিগুলো বড় বাজেটের ছিল না, কিন্তু ব্যবসার প্ল্যান ছিল একদম পরিষ্কার। আসলে, গল্প যাই হোক না কেন, দর্শক জানতেন—মিঠুন মানেই বিনোদনের গ্যারান্টি।”
মিঠুনের আত্মবিশ্বাস আর সরলতা নিয়েও গল্প শোনান তিনি। বলেন, একবার কোরিওগ্রাফার নাচের দৃশ্যে একাধিক রিটেক চাইলে মিঠুন মজা করে বলেছিলেন— “আমার হাত যদি ওইদিকে যায়, তাতে কি সিনেমা হিট হয়ে যাবে?” এই মন্তব্যেই ধরা পড়ে এক অহংকারহীন কিন্তু দর্শকের রুচি বোঝা শিল্পীর পরিচয়।
সরাসরি দাবি করে বসেন বিশেক, “অমিতাভ বচ্চনের থেকেও সফল ছিলেন মিঠুন। যতক্ষণ সিঙ্গেল স্ক্রিন রাজত্ব করত, মিঠুনদার জনপ্রিয়তা অমিতাভ বচ্চনের থেকেও বেশি ছিল। উনি স্টারডমের পেছনে ছোটেননি—নিজেই একটা স্টার ইকোনমি বানিয়ে নিয়েছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “মিঠুন চক্রবর্তী ছিলেন আমাদের বক্স অফিসের প্রাণ।”
সম্প্রতি দেবের সঙ্গে ‘প্রজাপতি ২’-এর শুটিং শেষ করেছেন মিঠুন। বেশ কয়েকদিন লন্ডনে শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। এই ছবিতে দেখা যাবে অনুপম খের, পল্লবী জোশী, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ দাসসহ একাধিক তারকাকে।
এসএন