মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, নারীর মর্যাদা এখনো যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের আন্দোলনের পর একাধিক তরুণীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে, আমরা নারীর নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত করতে পারিনি।’ তিনি আরও মন্তব্য করেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কাঠামো নারীদের সবসময় পেছনে ঠেলে দেয়।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে আয়োজিত ‘জুলাই কন্যা অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া একশ নারী এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
ফরিদা আখতার বলেন, ‘সমাজ ও পরিবারে সমান মর্যাদা অর্জনে নারীদের নিজেদের সংগ্রাম করতে হয়। বহুদিন ধরে আমরা সেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। তবে আমাদের বক্তব্য বা কার্যক্রমে যেন কোনো ধর্মীয় অনুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, সে বিষয়ে আমরা সর্বদা সতর্ক।’
যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে চলমান বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কিছু ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে। আমি মনে করি, প্রত্যেক মানুষেরই মানবিক মর্যাদা থাকা উচিত – সেটা যেকোনো পেশার হোক না কেন।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন কোথাও পবিত্র কোরআনের বিরোধিতা করেনি। বরং কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যারা ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী সম্পত্তি বণ্টন করতে চান, তারা তা করতে পারবেন। তবে যারা সমান বণ্টনের (সিভিল ল) পক্ষে, তাদের জন্য বিকল্প পথ থাকা উচিত।’
নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নিজে থেকে এগিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, ‘অধিকার কখনো কেউ নিজে থেকে দিয়ে যায় না, তা সংগ্রাম করে আদায় করে নিতে হয়।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনের সভাপতি জান্নাতুন নাঈম প্রমী। এ সময় বক্তব্য দেন বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের শহীদ আনাসের মা সানজিদা খান। উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিরাও নারীর অধিকারে কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিতের দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক নাফসিন মেহেনাজসহ ১০০ নারীকে ‘জুলাই কন্যা অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান করা হয়।
ইউটি/টিএ