প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর যে শুল্ক আরোপ করেছেন, তা নয়া দিল্লিকে আরও বেশি রাশিয়া ও চীনের দিকে ঠেলে দিয়েছে এবং আমেরিকার দীর্ঘদিনের কৌশলগত প্রচেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। সিএনএন-এ দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। খবর হিন্দুস্তান টাইমস
তিনি মন্তব্য করেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর যে শুল্ক আরোপ করেছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে খারাপ ফলাফল ডেকে এনেছে। এই পদক্ষেপ নয়া দিল্লিকে আরও বেশি রাশিয়া ও চীনের দিকে ঠেলে দিয়েছে এবং আমেরিকার দীর্ঘদিনের কৌশলগত প্রচেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বোল্টনের মতে, ট্রাম্পের এই নীতিতে একদিকে যেমন ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের উপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে চীনের প্রতি তিনি তুলনামূলকভাবে নমনীয় থেকেছেন যা একটি বড় ভুল হতে পারে। ভারতের উপর রাশিয়ার তেল কেনার কারণে যে উচ্চহারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, সেটিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত লক্ষ্যকে দুর্বল করার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, যে সেকেন্ডারি ট্যারিফ রাশিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য দেয়া হয়েছিল, তা উল্টো ভারতকে রাশিয়া ও চীনের আরও ঘনিষ্ঠ করে তুলেছে। এমনকি তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যৌথভাবে আলোচনায় নামতেও পারে।
বোল্টন সিএনএন-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, চীনের প্রতি ট্রাম্পের নমনীয়তা এবং ভারতের উপর কঠোর শুল্ক বহু দশকের আমেরিকান প্রচেষ্টাকে বিপন্ন করছে, যার লক্ষ্য ছিল ভারতকে রাশিয়া ও চীন থেকে দূরে আনা।
‘দ্যা হিল’ এ লেখা এক মতামত নিবন্ধে বোল্টন বলেন, বেইজিংয়ের সঙ্গে চুক্তির আশায় ট্রাম্প যে নমনীয় অবস্থান নিয়েছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থ বিসর্জনের মতো। তিনি লেখেন, হোয়াইট হাউস যদি চীনের উপর ভারতের তুলনায় কম শুল্ক আরোপ করে, তাহলে সেটি এক বিশাল ভুল হবে।
ট্রাম্প সম্প্রতি চীনের সঙ্গে একটি ক্ষণস্থায়ী বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করলেও, সেটির আরও বিস্তার এড়িয়ে গেছেন চুক্তির আশায়। কিন্তু ভারতের উপর তিনি ৫০ শতাংশেরও বেশি শুল্ক আরোপ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ২৫ শতাংশ সেকেন্ডারি ট্যারিফ, যা রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থায়নে ভারতের ভূমিকার অভিযোগে দেয়া হয়েছে।
ভারত এই শুল্ককে “অন্যায্য ও অযৌক্তিক” বলে নিন্দা করেছে এবং রাশিয়া এই বিষয়ে ভারতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। মস্কো বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র অবৈধ বাণিজ্যিক চাপ প্রয়োগ করছে। এই অভিযোগ এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন।
বোল্টন বলেন, এই বৈঠক পুতিনের জন্য তার কৌশলগত লক্ষ্যগুলো সামনে এগিয়ে নেয়ার একটি সুযোগ, এবং তিনি এই ভারতীয় শুল্ক ইস্যুকেও তার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
এমকে/টিকে