গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত। তিনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টকে জানিয়েছেন, এ মুহূর্তে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে নিয়েই আছেন। ভারতে বসে দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টকে জানান, নিজের কোনো শখকে এখন প্রাধান্য দিচ্ছেন না। পুরোনো আবেগ বা এ ধরনের কিছুকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন না। তিনি শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে নিয়েই ব্যস্ত আছেন। তার স্বপ্ন হলো ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাত করে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো।
তিনি বলেন, “হাসিনা দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশ রসাতলে রয়েছে। আমার একটি লক্ষ্য : বাংলাদেশের সবকিছু আবারও ঠিক করা। আমার সত্যি বলতে এখন কোনো শখ নেই, কোনো খেলাধুলার সময়ও নেই। অথবা অন্য কোনো বিনোদনকে আমার জীবনে যুক্ত করার ইচ্ছা নেই।”
ভারতে বসে এখন দিনরাত আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করছেন দাবি করে এম আরাফাত বলেন, “আমার ঘুমের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। মাঝে মাঝে আমি বিভ্রান্ত হই, এখন কি ভোর নাকি সন্ধ্যা। আমার প্রতিদিনের জীবন হলো শুধু কাজ, কাজ… আরও কাজ।”
আওয়ামী লীগের এক নেতা জানিয়েছেন, হাসিনার সরকার পতনের পর শুধু আওয়ামী নেতাকর্মীরা নয়— অনেক সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তাও ভারতে পালিয়েছেন। যে সংখ্যাটি দুই হাজারের বেশি হবে। গতকাল মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) প্রকাশিত প্রতিবেদনে কয়েকজন সাবেক এমপি, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের বিষয়টি তুলে আনা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটিকে ঢাকার এক তরুণ এমপি জানিয়েছেন, তিনি দিল্লিতে গিয়ে মাথায় চুল গজানোর চিকিৎসা করেছেন। কক্সবাজারের সাবেক পলাতক এক এমপি জানিয়েছেন, তিনি ও আরেক এমপি একসঙ্গে একটি ফ্ল্যাটে থাকছেন। তারা নিয়মিত নামাজ আদায়, জিম করছেন। আবার কাজের লোক না আসলে প্রায়ই নিজেদের রান্না করে খেতে হয় বলেও জানান তিনি।
পলাতক এসব মন্ত্রী ও এমপি ও আওয়ামী নেতারা কলকাতার নিউটাউনে আছেন উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যটি বলেছে, ‘যারা ভারতে আছেন তাদের বেশিরভাগ নিউ টাউনে বাস করছেন। এটি কলকাতার উপকণ্ঠে একটি দ্রুত বর্ধমান পরিকল্পিত শহর। শহরটির রাস্তাঘাট প্রশস্ত, সহজে সেখানে অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া পাওয়া যায়, শহরে শপিং মল, জিম আছে। এছাড়া এটি কলকাতার নেতাজি সুবাস চন্দ্র বোস বিমানবন্দরের কাছাকাছি অবস্থিত। যা পলাতক আওয়ামী নেতাকর্মীদের থাকার জন্য আদর্শ স্থানে পরিণত হয়েছে।
সূত্র: দ্য প্রিন্ট