বাংলাদেশিদের গড় আয়ু কমছে সাড়ে ৫ বছর

বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ এবং শুধু বায়ুদূষণের কারণে দেশের মানুষের গড় আয়ু সাড়ে পাঁচ বছর কমছে। ধূমপান ২ বছর এবং শিশু ও মাতৃকালের পুষ্টিহীনতা ১ দশমিক ৪ বছর জীবনকাল কমিয়ে দেয়। আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নতুন এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স (একিউএলআই) প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বস্তুকণা দূষণ (পিএম২.৫) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা অনুযায়ী ৫ মাইক্রোগ্রাম পার কিউবিক মিটার মান পূরণ করলে একজন বাংলাদেশি গড়ে সাড়ে পাঁচ বছর দীর্ঘজীবী হতে পারেন।
দেশের সবচেয়ে দূষিত এলাকা গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা।এ কারণে একজন বাসিন্দার জীবনকাল সাড়ে ৬ বছর হ্রাস পায়।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বায়ুদূষণই জীবনকাল হ্রাসের সবচেয়ে বড় বাহ্যিক হুমকি। দেশের ১৬ কোটি ৬৮ লাখ মানুষ এমন অঞ্চলে বসবাস করছে, যেখানে বার্ষিক গড় বস্তুকণা দূষণ ডব্লিউএইচও নির্দেশিকা এবং দেশের জাতীয় মান ৩৫ মাইক্রোগ্রাম পার কিউবিক মিটার ছাড়িয়ে গেছে।

সবচেয়ে কম দূষিত জেলা লালমনিরহাটেও কণা দূষণ ডব্লিউএইচও নির্দেশিকার সাতগুণ বেশি।

১৯৯৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশে কণা দূষণের মাত্রা ৬৬ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে, যার ফলে মানুষের জীবনকাল আরো ২ দশমিক ৪ বছর হ্রাস পেয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে দূষণ দেশের জাতীয় মান অনুযায়ী হ্রাস করলে জীবনকাল যথাক্রমে ৪ দশমিক ১ ও ৩ দশমিক ৩ বছর বাড়তে পারত।

প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার বায়ুদূষণেও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।

২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এই অঞ্চলে বায়ুদূষণ ২ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণের কারণে মানুষের গড় আয়ু ৩ বছর এবং সবচেয়ে দূষিত এলাকায় ৮ বছরেরও বেশি হ্রাস পাচ্ছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক দাবানল যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় বায়ুর মান খারাপ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দাবানলের ঘনত্ব ও পুনরাবৃত্তি বেড়েছে, যা পূর্বে অর্জিত স্বচ্ছ বাতাসের অগ্রগতি বিপরীতমুখী করছে।

একিউএলআই পরিচালক তনুশ্রী গাঙ্গুলি বলেছেন, এখনো বায়ুদূষণই বিশ্বের মানুষের জীবনকাল ছোট হওয়ার প্রধান কারণ।

জীবাশ্ম জ্বালানির উৎসে মনোযোগ দিলে স্থানীয় বায়ু পরিষ্কার হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়ক হবে। দেশগুলোকে সঠিক তথ্যভিত্তিক নীতি প্রণয়নের সক্ষমতা প্রয়োজন।

টিকে/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শোয়েব মালিকের সাথে বিচ্ছেদের পর মানসিক চাপের মুখে ছিলেন সানিয়া মির্জা Nov 14, 2025
img
আজ ঘোষণা করা হবে শাকসু নির্বাচনের তারিখ ও তফসিল Nov 14, 2025
img
সমালোচিত হয়েও রাশমিকার ‘দ্যা গার্লফ্রেন্ড’ সিনেমায় মুগ্ধ দর্শক Nov 14, 2025
img
লাঞ্চে গেছে আয়ারল্যান্ড, দীর্ঘ হল বাংলাদেশের জয়ের অপেক্ষা Nov 14, 2025
img
স্থগিত করা হলো জেমস-আলী আজমতের কনসার্ট Nov 14, 2025
img
নিরপরাধ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জুলুম করব না : রাশেদ খান Nov 14, 2025
img
এনসিপির হয়ে নির্বাচনের ঘোষণা নুসরাতের Nov 14, 2025
img
পাকিস্তানে বিতর্কিত ২৭তম সংবিধান সংশোধনীতে প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর Nov 14, 2025
img
সন্দেহ আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, হুমা কুরেশির বলিউডে প্রথম পদার্পণ Nov 14, 2025
img
একটা ঘটনাবহুল দিন পার করল বাংলাদেশ : জিল্লুর রহমান Nov 14, 2025
img
বিএনপি রেইনবো সরকার গঠন করবে : টুকু Nov 14, 2025
img
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত : জাহেদ উর রহমান Nov 14, 2025
img
চা বিক্রি করার সময় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার Nov 14, 2025
img
শাস্তি হিসেবে জরিমানা গুনল পাকিস্তান Nov 14, 2025
img
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সংবিধান প্রণয়নে সহায়তা করবে ফ্রান্স: ম্যাক্রোঁ Nov 14, 2025
img
শিকড়ের সঙ্গে স্বপ্নও থাকা জরুরি : কৌশিকী চক্রবর্তী Nov 14, 2025
এয়ার টিকিটের দাম ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা কমার দাবি বিমান উপদেষ্টার Nov 14, 2025
img
রাজধানীতে ফের বাড়ল সবজির দাম Nov 14, 2025
img
নির্বাচনের দিন গণভোটকে বিএনপি স্বাগত জানালেও সায় নেই জামায়াতের Nov 14, 2025
img
মানিকগঞ্জে স্কুলবাসে অগ্নিসংযোগ, ঘুমন্ত চালক দগ্ধ Nov 14, 2025