বাংলাদেশের ফুটবলে এখন বেশ প্রচলিত শব্দ ‘ক্লোজড ডোর’। জাতীয় দলের স্পেনিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা অনুশীলন, প্রস্তুতি ম্যাচ অধিকাংশ সময় ক্লোজড ডোর করছেন। গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকার মাঠ ও হোটেলে কমিয়ে এনেছেন প্রায় শূন্যের কোটায়।
বাংলাদেশ ৬ ও ৯ সেপ্টেম্বর নেপালের বিপক্ষে কাঠমান্ডুতে দু’টি প্রীতি ম্যাচ খেলবে। এই দুই ম্যাচের জন্য তিনটি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচের মধ্যে দু’টি খেলেছে বংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে। যেই দলে রয়েছেন নেপাল জাতীয় দলের অধিনায়ক কিরণ লিম্বু ও আয়ুশ ঘালান। পুলিশ দলের হেড কোচ আসিফুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন দুই নেপালী ফুটবলারই বাংলাদেশ জাতীয় দলের বিপক্ষে দুই ম্যাচ খেলেছেন।
কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা গণমাধ্যমকে প্রস্তুতি ম্যাচ দেখার সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন না। যেন প্রতিপক্ষ কোনো তথ্য বা কৌশল না জানতে পারে। অথচ প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়কের সঙ্গে তিনি দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলিয়েছেন। পুলিশের গোলরক্ষক কিরণ অত্যন্ত অভিজ্ঞ ফুটবলার। স্বাভাবিকভাবেই তিনি কোচ হ্যাভিয়েরের কৌশল, পরিকল্পনা ধরতে পারবেন। যা তিনি নেপাল দলের অস্ট্রেলিয়ান কোচ ম্যাট রসকে সরবারহ করবেন। বাংলাদেশ দল আগামীকাল কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ছে। এর আগেই দুই নেপালী ফুটবলার ঢাকা ছেড়েছে। এ নিয়ে পুলিশ দলের হেড কোচ বলেন, 'আয়ুশ জাতীয় দলে খেললেও এবার অ-২৩ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইয়ের জন্য ডাক পেয়েছে। তার পাশাপাশি কিরণকেও ফিফা উইন্ডোর জন্য ছুটি দেয়া হয়েছে।'
কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল নির্বাচন, খেলোয়াড় পরিবর্তন অনেক দিন থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ। এবার তার অদূরদর্শিতার বিষয়গুলোও সামনে আসছে। প্রীতি ম্যাচ নিয়ে বিশ্ব ফুটবলে কোচদের এমন কড়াকড়ি বিধি নিষেধ আরোপ দেখা যায় না। সেখানে তিনি প্রতিনিয়ত মিডিয়াকে আড়াল করে এমন দলের সঙ্গে প্রস্তুতি যাচাই করছেন যা ক’দিন পর খেলতে যাওয়া নেপাল দলের অধিনায়ক। পুলিশের বিপক্ষে খেলা দুই ম্যাচে অবশ্য জাতীয় দল পূর্ণাঙ্গ ছিল না। কারণ বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলাররা তখনো যোগ দেয়নি। তবে সেই অপূর্ণতাও আবার কিরণের পূর্ণ হয়েছে কারণ পুলিশ-কিংস আবার নিজেদের মধ্যে ম্যাচ খেলেছে।
আজ ফর্টিজ এফসি’র বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ দল নিয়ে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছ জাতীয় দল। এই ম্যাচটিও ক্লোজড ডোর হওয়ায় ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি ফেডারেশন। তবে জানা গেছে খেলাটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। জাতীয় দলে তপু বর্মণ গোল করেছেন। ফর্টিজ এবার নেপালী ফুটবলার অনন্ত তামাংকে দলে ভিড়িয়েছে। তিনি এখনো ঢাকায় আসেননি।
বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচ খেলেই ঢাকায় আসবেন। অনন্ত তামাং আজ না খেললেও টিম ভিডিও ফুটেজ কিংবা টিমমেটদের মাধ্যমে খানিকটা তথ্য পেতেই পারেন।
সার্ক অঞ্চলের ফুটবলাররা এখন দেশি হিসেবে গণ্য হওয়ায় ফর্টিজ, পুলিশ, রহমতগঞ্জ, ব্রাদার্স ইউনিয়নে নেপালি ফুটবলাররা খেলছেন। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে ঘরোয়া ফুটবল মৌসুম শুরু হচ্ছে। আবাহনী, বসুন্ধরা কিংস, ফর্টিজ ও পুলিশ ছাড়া অন্য কোনো ক্লাব সেই অর্থে ক্যাম্প শুরু করেনি। তাই হয়তো খানিকটা প্রয়োজনে পড়েই পুলিশের সঙ্গে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে হয়েছে জাতীয় দলকে। প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়কের সঙ্গে খেলতে বাধ্য হলেও মিডিয়াকে প্রবেশাধিকার দিতে যেন শত সমস্যা হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার। ফেডারেশনও যেন কোচের কাছে বড্ড নিরুপায়!
পিএ/টিএ