ফের কক্সবাজার সৈকতে আসছে বর্জ্য

জোয়ারের পানিতে কক্সবাজার সৈকতে আবারও ভেসে আসছে টন টন বর্জ্য। এসব বর্জ্যের মধ্যে খড় কুটো, গাছের গুঁড়ি, কলাগাছ, মদের বোতলসহ নানা উচ্ছিষ্ট রয়েছে। এসব বর্জ্যে সৌন্দর্যহানীর পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়ছে সমুদ্র সৈকত এবং স্থানীয়দের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। বিচ পরিচ্ছন্ন কর্মীরা বর্জ্য সরিয়ে নেওয়ার পর ফের জোয়ারে বর্জ্য এসে জড়ো হচ্ছে। এর আগে গত ১১ জুলাই একই সৈকতের কয়েক কিলোমিটারব্যাপী এলাকায় অকস্মাৎ টন টন বর্জ্য ভেসে এসেছিল।

জানা গেছে, সমুদ্র সৈকতের নাজিরারটেক থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত টন টন উচ্ছিষ্ট বর্জ্য ভেসে আসছে। ভেসে আসা এসব বর্জ্যের স্তুপ সৈকতে পড়ে রয়েছে। আবার অনেক স্থানে এসব বর্জ্য পরিষ্কার করছেন বিচ পরিষ্কার কর্মীরা। তবে একদিকে পরিষ্কার করা হচ্ছে অন্যদিকে আবার তা সৈকতে ভেসে যাচ্ছে।

এদিকে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে গত ৪ মাস ধরে সৈকতে দর্শনার্থীদের প্রবেশে কঠোর নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে বুধবার থেকে নিষেধাজ্ঞায় কিছুটা শিথিলতা দেখা গেছে। ফলে সৈকতে স্থানীয় দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। কিন্তু বর্জ্যের কারণে সৈকতে দর্শনার্থীদের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আর পুরো সৈকত হয়ে পড়েছে সৌন্দর্যহীন।

সৈকতে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, মঙ্গলবারও পুরো সৈকত ছিল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। কিন্তু বুধবার থেকে সৈকতের বালিয়াড়িতে নানা ধরনের বর্জ্য ভেসে আসছে। ভেসে আসছে খড়কুটো, বাঁশ, গাছের গুঁড়ি, কলাগাছ, কচুরিপানা এবং প্লাস্টিক ও কাঁচের বোতল। যার কারণে বালিয়াড়িতে হাঁটা যাচ্ছে না। আর পুরো সৈকতে অপরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে। একই সাথে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে।

এদিকে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ৩০ জন বিচ পরিষ্কার কর্মী বর্জ্য পরিষ্কারে কাজ করছেন। বুধবার সকাল থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত পরিষ্কার করেছে প্রায় ৫ ট্রাক বর্জ্য। যা জমা রাখা হয়েছে সৈকতের সি গাল পয়েন্টে।

বিচ পরিষ্কার কর্মী মুবিনা বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সকাল ৮টা থেকে সৈকতে সুগন্ধা পয়েন্টে সৈকত পরিষ্কারের কাজ করছি। কিন্তু সৈকতে ভেসে আসা এসব বর্জ্য পরিষ্কার করা যাচ্ছে না। এদিকে পরিষ্কার করছি, অন্যদিকে জোয়ারের পানিতে নতুন করে বর্জ্য ভেসে আসছে। এসব বর্জ্য আসা কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছে না।

বিচ পরিষ্কার কর্মীদের সুপার ভাইজার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন বলেন, সৈকতের নাজিরারটেক থেকে শুরু করে হিমছড়ি সৈকত পর্যন্ত এসব খড়কুটো, গাছের গুঁড়ি, কলাগাছসহ নানা বর্জ্য ভেসে আসছে। কিন্তু বর্জ্য আসা কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। এ পর্যন্ত ৩ ট্রাক বর্জ্য পরিষ্কার করেছি। দেখা যাচ্ছে; সৈকতে লাবণী থেকে কলাতলী পর্যন্ত আরও ৩০ ট্রাক বর্জ্য সৈকতে পড়ে আছে। আর বাকি সৈকতও একই অবস্থা।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বর্জ্য ভেসে আসার বিষয়টি সরজমিনে দেখতে বৃহস্পতিবার সকালে সৈকতে আসেন। তিনি বলেন, সমুদ্র সৈকতে একের পর এক বর্জ্য ভেসে আসাটা চিন্তার বিষয়। সৈকতে বর্জ্য ভেসে আসার বিষয়টি নিয়ে তদন্তের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা এসব দেখে প্রতিবেদন তৈরি করবেন।

সৈকতে পড়ে থাকা বর্জ্য পরিষ্কারে বিচ পরিষ্কার কর্মীরা কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রুত এসব বর্জ্য সৈকত থেকে পরিষ্কার করে ফেলা হবে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: