প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ সাত দাবিতে বিক্ষোভ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে মিছিল নিয়ে প্রক্টর অফিসের সামনে যান শিক্ষার্থীরা। সেখানে স্লোগানের মাধ্যমে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা সাত দফা দাবি লিখে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন এবং স্লোগান দেন ‘১ ২ ৩ ৪, প্রক্টর তুই গদি ছাড়’; ‘যেই প্রক্টর আমার না, সেই প্রক্টর মানি ন ‘; ‘কোরবান তুই গদি ছাড়, এই মুহূর্তে গদি ছাড়’; ‘আমার ভাই আইসিইউতে, প্রশাসন নিয়োগ বোর্ডে’; ‘যেই প্রক্টর দালালি করে, সেই প্রক্টর আমার না’; ‘দালালের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’।
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জসদ জাকির বলেন, ‘আমরা আজ সাত দফা দাবিতে প্রক্টর অফিসের সামনে আন্দোলন ডেকেছি। কারণ উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য প্রশাসন দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করা, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ও অবস্থার প্রতি প্রশাসনের মনোযোগ দেয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন এখনও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে থাকা শিক্ষার্থীদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং নিরাপত্তা নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আমাদের মুখ্য দাবি হচ্ছে প্রশাসন নিজের দায় শিকার করে ক্ষমা চেয়ে অতিসত্বর পদত্যাগ করবে।’
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, ‘আজকের কর্মসূচি প্রক্টরসহ প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবি। প্রক্টরিয়াল বডি গত কয়েক মাসে নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। গুপ্ত হামলা থেকে প্রকাশ্যে হামলার ব্যাপারে প্রক্টরিয়াল বডি কার্যকরী ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা চাচ্ছি প্রক্টরিয়াল বডি নিজেদের দায় শিকার করুক এবং ক্ষমা চাক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে।’
নারী অঙ্গনের সংগঠক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। কারণ বিগত কয়েক মাসে যতবারই আমরা নিরাপত্তা চেয়েছি তারা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আমরা তো নিরাপত্তা চাই। ভয় বা নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে চাই না।’
শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবিসমূহ:
১। আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা প্রদান।
২। নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা করা এবং আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৩। উদ্ভুত পরিস্থিতিকে ঘিরে বিশেষভাবে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৪। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরপরাধ এলাকাবাসীদের হয়রানি বন্ধ করা।
৫। বৈপরীত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয়পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা এবং ন্যূনতম তিন মাস পরপর মিটিং করা।
৬। সিন্ডিকেটকর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করা।
৭। উদ্ভুত পরিস্থিতির দায় নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করা। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ না করলে মশাল মিছিল ও প্রতিবাদ হিসেবে প্রক্টর অফিসে লাল রঙ নিক্ষেপ করে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
পিএ/এসএন