চীনের যুদ্ধবিমান ও আমেরিকার বোয়িংয়ের ফাঁদে দেশ : রনি

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, ‘আমরা একটা ডিপ্রেশনের মধ্যে পড়েছি। আমাদের জাতীয় আমানত এখন সব মিলিয়ে বলা হয় যে ১৬ লাখ কোটি টাকা। আমি এর আগে একবার শুনেছিলাম যে আমাদের টোটাল আমানত সব মিলিয়ে ৮ লক্ষ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণই যদি সাড়ে চার লক্ষ কোটি টাকা হয়; তাহলে অর্ধেকের চেয়ে বেশি টাকা নেই।

আবার যদি ১৬ লাখ কোটি টাকা হয় তাহলে চার ভাগের এক ভাগ টাকা নেই।’

রনি বলেন, ‘আবার এর মধ্যে এখন চীন বুদ্ধি দিচ্ছে বা প্রেশার ক্রিয়েট করছে যে তাদের কাছ থেকে যুদ্ধবিমান কেনার জন্য। আর এটার মধ্যস্থতা করছে পাকিস্তান। এই মুহূর্তে যুদ্ধবিমান কিনে আমরা কার সঙ্গে যুদ্ধ করব।

পাকিস্তানের সঙ্গে, না ভারতের সঙ্গে, নাকি মায়ানমারের সঙ্গে। কয় ঘণ্টা টিকব। দামি যুদ্ধবিমানগুলোর এক একটার দাম চার হাজার কোটি থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এরকম যদি ১৫টা যুদ্ধবিমান কেনা হয় তাহলে ৬০ হাজার কোটি টাকা।

এখন আমাদেরকে চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হলে, ক্ষমতায় থাকতে হলে, এই ৬০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে যুদ্ধবিমান কিনতে হবে, আর ভারতকে শত্রু বানাতে হবে।’
অন্যদিকে আমেরিকা বলছে যে আমরা ডিপস্টেট করে বা তোমাদেরকে যে শুল্ক ছাড় দেব বা ছাড় দিলাম, এখান থেকে তোমরা অনেকগুলো এক্সপোর্ট করবা। বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা তোমরা আয় করবা। তো তোমরা কী নেবে আমাদের কাছ থেকে? এই ২৫টি বোয়িং বিমান কিনো। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার মূল্যে ১২টি ড্রিমলাইনার দিল।

এগুলোই আমরা চালাতে পারছি না। এরপর আবার ২৫টি বোয়িং বিমান দিয়ে কী করব?

বর্তমানে যেভাবে প্রাইস বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে ২৫টি বিমান যদি আমাদেরকে কিনতে হয়, কমপক্ষে ২০ বিলিয়ন ডলার এই মুহূর্তে আমাদেরকে দিতে হবে। কিন্তু আমরা গার্মেন্টস থেকে আগামী এই ডোনাল্ড ট্রাম্প পাঁচ বছর ক্ষমতায় যদি থাকে আমরা তো ২০ বিলিয়ন ডলার এখান থেকে নেট প্রফিট করতে পারব না। কিন্তু আমাদেরকে ২০ বিলিয়ন ডলারের এই ২৫টা বোয়িং কিনতে হবে। আর এই টাকা আমাদেরকে হয়তো ৩০ বছর বসে বসে ২০ বিলিয়ন ডলার সুদসহ ৩০ বিলিয়ন ডলার পে করতে হবে। এটা অপ্রয়োজনীয়।’


তিনি আরো বলেন, ‘এই যে একটা অবস্থার মধ্যে আমরা পড়েছি, মানে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র; তারা আমাদের ফাঁদে ফেলে সর্বশেষ সম্বলগুলো নিয়ে নেবে। কাজেই আপনার যখন দুরবস্থা বিপদের সময়, কারো কাছে যাবেন না। আপনার শেষ সম্বলটুকু অর্থাৎ আপনার স্ত্রী, আপনার সন্তান, আপনার পকেটের টাকা এমনকি আপনার হাতে যদি একটা বালা থাকে ওটাও লোভী মানুষ খুলে নেবে, এক কেজি চাল দেওয়ার নাম করে। এক কেজি চালের দাম ধরেন এক টাকা, আপনার হাতে যে বালাটা আছে ১০ টাকা। আপনার ক্ষুধাকে পুঁজি করে সেটা খুলে নিয়ে যাবে। আমাদের এখন যে ক্রান্তিকাল, এই ক্রান্তিকালে আমরা এখন এই যে বোয়িংয়ের কবলে পড়েছি, যুদ্ধবিমানের কবলে পড়েছি, আল্লাহ এর থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন, হেফাজত করুন।’

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা নিতে হবে সরকারকে : সাইফুল হক Oct 25, 2025
img
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে প্রাণ ফিরেছে বগালেক ও কেওক্রাডংয়ে Oct 25, 2025
img
সিনেমায় তিন মাসের জন্য এসেছিলাম, ২৬ বছর কেটে গেল বুঝতেই পারিনি: শাকিব খান Oct 25, 2025
img
মিরপুরে আগুনের সূত্র এখনো নিশ্চিত নয় ফায়ার সার্ভিস Oct 25, 2025
img
অতীতের মতো আবারও বিএনপি-জামায়াত দ্বন্দ্বে লিপ্ত : মঞ্জু Oct 25, 2025
img
ওমরাহ যাত্রীদের জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করল সৌদি Oct 25, 2025
img
খেলা দেখতে আসার আহ্বান জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক Oct 25, 2025
img
ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে জাবিপ্রবিতে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Oct 25, 2025
img
১০০ মিটারে পদক নেই বাংলাদেশের, হিটই শেষ করতে পারেননি শিরিন Oct 25, 2025
img
ঐক্যবদ্ধ বিএনপির কোনো বিকল্প নেই : দুলু Oct 25, 2025
img
মিরপুরে বহুতল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে Oct 25, 2025
img
ধর্ম ব্যবসায়ীদের থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে : জিন্নাহ কবির Oct 25, 2025
img
বিচারপ্রক্রিয়া জামায়াতের দখলে : আমজনতার তারেক Oct 25, 2025
img
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে অংশ নিতে মাঠে কাজ শুরু করেছে বিএনপি : আমীর খসরু Oct 25, 2025
img
নিজ বাড়ির সামনেই বিএনপি নেতাকে গুলি Oct 24, 2025
img
সাম্প্রতিক সংঘাতসমূহ বিশ্বকে গভীর অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে: ড. ইউনূস Oct 24, 2025
img
আওয়ামী লীগ বাদে সব দলের ভালো মানুষদের জন্য এনসিপির দরজা খোলা: সারজিস Oct 24, 2025
img
পথে বিয়ে করতে যাওয়া বরকে ধরে নিয়ে গেলো ইসরায়েলি সেনা Oct 24, 2025
img
ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে চট্টগ্রামে হেফাজতের বিক্ষোভ Oct 24, 2025
img
কালশীতে বহুতল ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৪ ইউনিট Oct 24, 2025