জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে অনিয়মের দায় স্বীকার করে নির্বাচন কমিশন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম জাবি শাখার সভাপতি।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে নতুন কলা ভবনে তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন ব্যবস্থা ও ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে আমি পদত্যাগ করছি। লিখিতভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর ও সাংবাদিকদের জানানো হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে সমান সুযোগ বা “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ ছিল না। সিদ্ধান্ত ছিল মেশিনের মাধ্যমে ভোট গণনার, কিন্তু তা না করে ম্যানুয়ালি গণনা করা হয়েছে, যা একটি বড় অনিয়ম।
মাফরুহী সাত্তার আরও জানান, অনিয়মের বিষয়টি লিখিতভাবে জানালেও নির্বাচন কমিশন প্রতিকার নেয়নি। উল্টো তাকে পদত্যাগ না করার জন্য চাপ দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, বিবেকের তাড়নায় আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার পরিষ্কার করে জানান, তিনি বিএনপির সঙ্গে জড়িত নন। তবে একটি আদর্শে বিশ্বাসী হওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্বাচনে আমি অনেক অনিয়ম দেখেছি, যা প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমার মতামতের সুরাহা না করেই ভোট গণনা শুরু হয়। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়।
এর আগে রাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান জানান, ম্যানুয়েল পদ্ধতিতেই চলবে জাকসুর ভোট গণনা, ইতোমধ্যে গণনার কাজের জন্য পোলিং অফিসার বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং রাতের মধ্যেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার পর হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়া হয় ভোট গণনা। জানা যায়, ভোট গণনা বন্ধ রেখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে একটি জরুরি বৈঠক চলছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সময় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানানো হয়েছে। শিগগিরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলেও জানিয়েছে প্রশাসন।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে প্রায় ৬৭ থেকে ৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে ভোট গণনা শুরু হলেও আজ বিকেলে হঠাৎ তা বন্ধ হয়ে যায়।
ইএ/টিকে