মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, “আমরা কথায় কথায় বলি ‘মাইনোরিটি গ্রুপ’ বা ‘সংখ্যালঘু’। এই শব্দগুলো সমাজে বিভেদ তৈরি করে। এগুলো আমাদের অভিধান থেকে মুছে ফেলতে হবে। বাংলাদেশে সবাই সমান।
তাহলে কেন কাউকে ‘সংখ্যালঘু’ বলে আলাদা করা হবে? যারা এসব শব্দ ব্যবহার করে, তারা কখনো বাংলাদেশের ভালো চায় না। তারা সব সময় ষড়যন্ত্রের জাল বুনে চলে।”
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ প্রশাসন এম সাইফুর রহমান অডিটরিয়ামে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময়সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘একটি রাষ্ট্রে সব ধর্মের মানুষ থাকবে, এটাই স্বাভাবিক।
মাইনোরিটি শব্দ ব্যবহার মানে আগে থেকেই কারো মনোবল দুর্বল করে দেওয়া। যারা এ ধরনের কথা বলে, তাদের থেকে দূরে থাকুন। তারা দেশ ও সমাজের মঙ্গল চায় না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যত আধুনিক হচ্ছি, ততই হানাহানির মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে।
বিভিন্ন সময় দেখা যায়, পূজামণ্ডপে হাত দেওয়া বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হচ্ছে। অথচ ১৫-২০ বছর আগে এমনটা ছিল না।’
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রসঙ্গ টেনে জাহাঙ্গীর হোসেন আরো বলেন, এখনো বাংলাদেশের কোনো পাড়া বা মহল্লার কোনো হিন্দু বা মুসলিম যদি একসঙ্গে বসবাস করে, কোনো সমস্যা হলে তারা একে অপরের পাশে দাঁড়ায়, খাবার দেয়; ওষুধ দেয়। তাহলে কেন আমাদের মাঝে এসব বিভ্রান্তমূলক শব্দ বলে আমাদের বন্ধনটাকে আরো দুর্বল করে দিচ্ছে।
তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে উসকানি তৈরির আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, এখন এআই দিয়ে পূজামণ্ডপে হামলা বা মূর্তি ভাঙচুরের ছবি ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব।
এ রকম ভিডিও দেখলে আগে যাচাই-বাছাই করে নেবেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
পুলিশ সুপার বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক সাহসিকতার সঙ্গে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে আনন্দঘন পরিবেশে দুর্গোৎসব পালন করতে পারেন, সে ব্যাপারে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। হিন্দু ভাইদের যাতে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করতে না হয়, সে ব্যাপারে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার ব্যাপারে কখনো ছাড় দেওয়া হবে না। সবাই তৎপর থাকলে দুষ্কৃতকারীরা কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মা-বোনেরা যেন নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে পারেন, সে জন্য পুলিশ সর্বদা তৎপর থাকবে। যাতে কোনো অবস্থায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগেন। প্রতিটি থানার ওসিকে যুক্ত করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হবে। যেকোনো মেসেজ মুহূর্তে পুলিশ সুপারের ফোনে পৌঁছাবে। নাগরিকরা এই গ্রুপের মাধ্যমে সরাসরি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।’
এমআর/এসএন