এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু বলেছেন, আওয়ামী লীগের বেশি ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে এনসিপি নেতাদের প্রতি। আমরা দেখেছি, ওই সফরে ড. ইউনূসের সঙ্গে আরো তিনটি রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াত এবং এনসিপির প্রতিনিধি দল ছিল। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের একটা কৌশল হতে পারে। এর আগেও দেখা গেছে, যখন সরকারের উপদেষ্টারা বিদেশে গিয়েছিলেন তখন সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না।
সে সময় ক্ষোভটা মূলত সরকারের প্রতি ছিল। কিন্তু এবার সরকার অনেকটা সেই ক্ষোভ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে পেরেছে। ফলে ক্ষোভটা সরাসরি সরকারের ওপর পড়েনি। রাজনৈতিক নেতাদের পাঠিয়ে মূল ক্ষোভকে অন্যদিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দেশের একটি গণমাধ্যম টকশো অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে মজিবুর রহমান ভূঁইয়া এসব কথা বলেন।
মজিবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, এবার প্রফেসর ইউনূস বা তার দলে যারা ছিলেন তাদের প্রতি খুব একটা ক্ষোভ দেখা যায়নি। মূলত ক্ষোভটা গেছে এনসিপির নেতাদের দিকে। এরপর কিছুটা ক্ষোভ গেছে বিএনপির ও জামায়াতের দিকেও।
তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ, এমনকি গায়ে হাত তোলার মতো গালিগালাজ আমরা দেখেছি আক্তারের প্রতি। এটি আমাদের একটি পর্যবেক্ষণ।
দ্বিতীয়ত, আমরা দেখেছি জামায়াত অনেক বেশি সুসংগঠিত ছিল। তারা তাদের নেতাকে রক্ষা করেছে এবং পাশাপাশি অন্যদের প্রতিও কিছুটা সহযোগিতামূলক মনোভাব দেখিয়েছে। কিন্তু সেই জায়গায় বিএনপি বা এনসিপি তাদের প্রবাসী কর্মীবাহিনীকে সেভাবে সংগঠিত করতে পারেনি।যদিও আমি ব্যক্তিগতভাবে এই পাল্টাপাল্টির পক্ষে না।
প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন হয়েছে এবং পৃথিবীর অনেক দেশেই এমন ব্যবস্থার উদাহরণ আছে। আমরাও আগে বলেছি, প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়া উচিত কারণ তারা এ দেশের নাগরিক এবং দেশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন।
মজিবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, প্রতিবাদ গণতান্ত্রিক অধিকার। এতে কোনো সন্দেহ নেই। অতীতেও মানুষ প্রতিবাদ করেছে, এখনো করছে। কেউ বাইরে থেকে প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ করলে, স্লোগান দিলে, মত প্রকাশ করলে সেটাকে গণতান্ত্রিকভাবে গ্রহণযোগ্য বলেই ধরা হয়। কিন্তু যখন গালিগালাজ, শারীরিক আক্রমণ বা ডিম নিক্ষেপের মতো আচরণ করা হয়, তখন তা আর গণতান্ত্রিক থাকে না, তা বরং অন্যের অধিকারের লঙ্ঘন হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের বিধান অনুযায়ী, দেশের বাইরে কোনো রাজনৈতিক দলের শাখা খোলা নিষিদ্ধ। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখি, প্রায় সব দলেরই বিদেশে শাখা রাখছে, আওয়ামী লীগ, বিএনপি এমনকি জামায়াতেরও। জামায়াত এখানে কিছুটা ব্যতিক্রম। তারা দলীয় পরিচয়ে শাখা খুলে না বরং বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নামে কাজ করে। এসব সংগঠন অনেক সময় স্থানীয়ভাবে রেজিস্টার্ড থাকে, ফলে আইনত তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার কথা না। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, এসব সংগঠনের মাধ্যমেই তারা বাংলাদেশের রাজনীতিতে যুক্ত থাকে।
কারণ, এসব সংগঠনে সাধারণত আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা অন্যদলের নেতাদের অংশ নিতে দেখা যায় না বরং জামায়াত সংশ্লিষ্ট নেতাদেরই তারা নিয়ে যায়।
এমআর