শিরোপা জয়ের মতো বড় লক্ষ্য নিয়ে এশিয়া কাপ খেলতে গিয়েছিল তিনবারের রানারআপ বাংলাদেশ। গতকাল (বৃহস্পতিবার) পাকিস্তানের কাছে ১১ রানে হেরে তাদের সেই স্বপ্ন গুড়ে বালি হয়েছে। পুরো টুর্নামেন্টে ভগ্ন ব্যাটিং পারফরম্যান্স নিয়ে ভুগেছে বাংলাদেশ। এর মাঝে বড় শট খেলায় নাম কামানো জাকের আলি অনিকও আলোচনায়। এশিয়া কাপের ৬ ম্যাচে ৬৬ বল খেলেও তিনি কোনো ছক্কা মারতে পারেননি।
পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন জাকের। লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে তার কাঁধে নেতৃত্বের ভার দেয় বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। অধিনায়কত্বের পাশাপাশি উইকেটকিপিংয়ের চাপ, সেখানে তো দুর্বলতা ছিল-ই, আগে থেকেই এশিয়া কাপজুড়ে ম্লান ছিল তার ব্যাট। অথচ টুর্নামেন্টটি খেলতে যাওয়ার আগে পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উডের কাছ থেকে হিটিং দক্ষতার প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন জাকের। এমনকি সবচেয়ে উন্নতির ছাপও তিনি দেখান বলে জানা গিয়েছিল।
সবমিলিয়ে এশিয়া কাপে জাকেরের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা। সবাইকে হতাশ করে তিনি এশিয়া কাপের ৬ ম্যাচে ১০৭.৫৭ স্ট্রাইকরেটে স্রেফ ৭১ রান করেছেন। ছয়হীন তো ছিলেন-ই, জাকেরের ব্যাটে চার দেখা গেছে মাত্র ৫টি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কেবল বলার মতো ৪১ রান করেছেন, তাতেও খেলেছেন ৩৪ বল। দলের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বললেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে এখনও কিছু শোনা যায়নি জাকেরের মুখে, ‘ব্যাটিং ইউনিটের কারণে শেষ দুই ম্যাচে আমরা হেরেছি। বোলিং ইউনিট তাদের কাজটা ঠিকভাবেই করেছে। ভালো বোলিং হয়েছে। আগের ম্যাচের আজও ব্যাটিংয়ের কারণে ম্যাচ হেরেছি।’
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রাপ্তির জায়গা বলতে সাইফ হাসানের ব্যাটিং প্রদর্শনী। এক সময় সীমিত সামর্থ্য ও কৌশলগত ঘাটতির কারণে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া এই ব্যাটার এবার অন্য রূপে হাজির হন। টুর্নামেন্টে তিনি দুটি ম্যাচের একাদশে ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ৪ ম্যাচ খেলেই করেছেন বাংলাদেশের পক্ষে এবারের আসরে সর্বোচ্চ রান। সাইফ ৪ ম্যাচে ৪৪.৫০ গড় এবং ১২৮.০৫ স্ট্রাইকরেটে ১৭৮ রান করেছেন। যা চলমান এশিয়া কাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এ ছাড়া মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতায় প্রথমবার খেলতে নেমেই সাইফ হাসান ১২টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তো বটেই, সবমিলিয়েও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এখন পর্যন্ত সাইফের সামনে আছেন কেবল ভারতীয় ওপেনার অভিষেক শর্মা (১৭)। এ ছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩টি করে ছয় মেরেছেন তানজিদ হাসান তামিম, শামীম হোসেন পাটোয়ারী এবং তাওহীদ হৃদয়। পারভেজ হোসেন এমন ২টি ছক্কা হাঁকান।
কেবল চলতি আসরেই নয়, এখন পর্যন্ত হওয়া টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপেও বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ছয়ের রেকর্ড গড়েছেন সাইফ। একইসঙ্গে তার হাঁকানো ১২টি ছয় এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির ইতিহাসেও পঞ্চম সর্বোচ্চ। ৭টি ছয় নিয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে এরপর অবস্থান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। এ ছাড়া টুর্নামেন্টটিতে সাব্বির রহমানের ছক্কা ৫টি।
এসএস/এসএন