ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার উদ্দেশে এগিয়ে চলা ত্রাণবাহী নৌ-বহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম।
সামাজিক মাধ্যমে দেয়া পোস্টে নিজেই জানিয়েছেন তিনি। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ইতালির ওট্রান্টো থেকে ফ্লোটিলার বৃহত্তম জাহাজ ‘কনসায়েন্স’-এর অভিযাত্রী হলেন ড. শহিদুল আলম।
ইসরায়েলের হামলার আশঙ্কার মধ্যে গাজা উপত্যকার ওপর জায়নবাদী দেশটির আরোপিত সর্বাত্মক অবরোধ ভেঙে দেয়ার দৃঢ় সংকল্পে অটল রয়েছে ফ্লোটিলা।
গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম ফ্লোটিলায় যোগ দেয়ার ঘোষণা দেন। রাজধানী ঢাকার শুক্রাবাদে দৃকপাঠ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গাজা উপত্যকায় চলমান নৃশংসতার বিষয়ে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের নীরবতা ভাঙতে আন্তর্জাতিক সংগঠন ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) উদ্যোগে পরিচালিত ‘মিডিয়া ফ্লোটিলা’ অভিযানে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী পরদিন রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ইতালির উদ্দেশে রওনা হন শহিদুল আলম। গ্লোবাল মিডিয়া ফ্লোটিলাতে যোগদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে গণহত্যা চলছে।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে ফিলিস্তিনে, গাজায় মানুষ হত্যা করছে। তার সঙ্গে পাশ্চাত্যের অনেকগুলো দেশ যুক্ত, তারাও সহযোগিতা করছে এবং তারাও এতে অংশীদার।
‘কিন্তু পৃথিবীর অনেক দেশের অনেক মানুষ– সারা পৃথিবীর মানুষ এর প্রতিবাদও করছে এবং এই প্রতিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রেখে আমি আগামীকাল মিডিয়া ফ্লোটিলায় যোগ দিতে যাচ্ছি।’
শহিদুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে আমি প্রথম যাচ্ছি, কিন্তু মনে করি বাংলাদেশের সকল মানুষের ভালবাসা সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি। এই সংগ্রামে শুধু আমাদের থাকলেই হবে না, এতে যদি আমরা পরাজিত হই, তাহলে মানবজাতি পরাজিত হবে। যাওয়ার পর আমি প্রতিদিনই যতটা সম্ভব তথ্য ও ছবি পাঠাতে চেষ্টা করব। জানামতে এই প্রথম বাংলাদেশ থেকে কেউ এ ধরনের ফ্লোটিলাতে অংশ নেবে।’
শহিদুল আলম আরও বলেন, ‘এবার ৫০টির অধিক জাহাজ যাচ্ছে। আমরা যেই জাহাজে যাচ্ছি, সেটিতে প্রায় ১০০ জন থাকবে। যার মধ্যে এক–তৃতীয়াংশ সাংবাদিক, এক–তৃতীয়াংশ চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত আর এক–তৃতীয়াংশ থাকবে, যারা এটি আয়োজন করেছে। তার সঙ্গে আরও ১০টি ছোট নৌযান থাকবে। ৪৪টি দেশ থেকে এই ফ্লোটিলাতে অংশ নিচ্ছেন।’
ইসরায়েলি হামলার শঙ্কা নিয়ে ড. শহিদুল আলম বলেন, ‘তারা আমাদের থামানোর চেষ্টা করবে। আমরা এর জন্য প্রস্তুত। আমরা প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আমরা সম্ভাবনা ও বিপদগুলো জানি, তবে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
ইএ/টিএ