রিজার্ভ ছাড়াল ৩২ বিলিয়ন ডলার , টেকসই রাখতে প্রয়োজন বিদেশি বিনিয়োগ

করোনার সময় হুন্ডির তৎপরতা কমায় বৈধ পথে বাড়ে প্রবাসী আয়। বাড়তে থাকে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ। ২০২১ এর আগস্টে রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৮ বিলিয়ন ডলারে। তবে বেশিদিন ধরে রাখা সম্ভব হয়নি রিজার্ভের এই ঊর্দ্ধগতি, বছর দুয়ের মধ্যে নামে অর্ধেকে।

তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে আবারও বাড়তে শুরু করে রিজার্ভর পরিমাণ। রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স, রফতানি আর বিদেশি ঋণে ভর করে গতকাল মঙ্গলবারে (১৪ অক্টোবর) দেশের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী বললেন, বিভিন্ন প্রক্রিয়া আমরা গ্রহণ করেছি এবং একই সাথে প্রবাসীরা টাকা পাঠাচ্ছে, তারপর আমাদের রফতানি আয় বেড়েছে। সব মিলিয়ে এখন রিজার্ভটা উপরের দিকে যাচ্ছে। একটা দেশের অর্থনীতির জন্য তিন মাসের আমদানি বিল পরিশোধ করার মতো যদি অর্থ থাকে, সেক্ষেত্রে এই অর্থনীতিকে সক্ষম একটা অর্থনীতি অর্থাৎ রিজার্ভটা শক্তিশালী অবস্থানে আছে ধরা হয়, সেই বিবেচনায় আমরা এখন অনেক ভালো আছি।

রিজার্ভ স্বস্থিদায়ক হলেও এটি ধরে রাখার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। চলতি অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি আগের মতো না-ও হতে পারে। উল্টো আমদানি বাড়লে চাপ পড়বে রিজার্ভের ওপর। এজন্য রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার পাশাপাশি বিদেশি ঋণের ব্যবহার এবং বিনিয়োগে জোর দেয়ার পরামর্শ তাদের।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ারগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, রেমিট্যান্স ও রফতানির প্রবণতাকে ইতিবাচক রাখার চেষ্টা করতে হবে। ঋণের অবমুক্তিটা যাতে আমরা দ্রুত করতে পারি, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এনে সেটাও যাতে রিজার্ভে একটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। কারণ, আগামীতে কিন্তু দুইটা চাপ বাড়বে। একটা হলো আমদানির চাপ, আর দ্বিতীয় যেটা সেটা হলো ঋণ পরিসেবার চাপ। দুটোকে সামাল দিতে গেলে আমাদের অন্যদিক থেকে আয়ের জায়গাগুলো সেটা যদি দ্রুত হারে না বাড়ে তাহলে কিন্তু রিজার্ভের ওপর একটা চাপ সৃষ্টি হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছেন, আকু পেমেন্ট ও বৈদেশিক ঋণের পরিশোধের চাপ থাকলেও বড় ধরনের কোনও চ্যালেঞ্জ নেই। তাই রিজার্ভে বড় ধরনের পতনের শঙ্কা নেই।

মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, আমদানির বিষয়টা আসলে বাংলাদেশে ব্যাংক সরাসরি ফান্ডিং করবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক এর আগেও করেনি। গুটিকয়েক শুধুমাত্র সরকারের আমদানিগুলো করে থাকে অথবা অর্থনীতির প্রয়োজনে যদি সার আমদানির দরকার হয়, কৃষি খাতের জন্য যেটা আমাদের সামনে দরকার হবে সেগুলোর ক্ষেত্রে কিছু পেমেন্ট করে। বাকি যে আমদানির বিষয় আসছে ব্যাংকগুলো আন্তঃব্যাংক থেকে এবং প্রবাসীদের অর্থ ব্যবহার করেই তারা সেটা পরিশোধ করতে পারবে। সুতরাং শিগগিরই এত অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ নেই।

বৈধ পথে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থপাচার রোধে সরকারের কঠোর অবস্থান অব্যাহত রাখার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।

এমকে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ওয়ার্কশপে অস্ত্র তৈরি, গ্রেপ্তার কারিগর Dec 10, 2025
img
তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ : টুকু Dec 10, 2025
img
'বিয়ের সাবস্ক্রিপশন বাতিল করতে ভুলে গিয়েছিলাম', বিবাহবার্ষিকীতে মনখারাপ দেবলীনার! Dec 10, 2025
img

ফাওজুল কবির খান

দুর্নীতিযুক্ত প্রক্রিয়া থেকে একটা দুর্নীতিমুক্ত প্রক্রিয়ায় যাচ্ছি Dec 10, 2025
img
প্রচার-প্রোপাগান্ডা খাতে আর্থিক বরাদ্দ ২০ গুণ বাড়াল ইসরায়েল Dec 10, 2025
img
রিয়াদ-দোহাকে সংযুক্ত করতে উচ্চগতির রেল চালু করছে সৌদি ও কাতার Dec 10, 2025
img
নারীবাদীদের ‘নোংরা দুশ্চরিত্রা’ হিসেবে অভিহিত করলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের স্ত্রী Dec 10, 2025
img
রুশ সামরিক বিমান বিধ্বস্ত, নিহত সব আরোহী Dec 10, 2025
img
পাকিস্তানকে আরও ১২০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে আইএমএফ Dec 10, 2025
img
পেনাল্টিতে ইন্টারের মাঠে লিভারপুলের জয় Dec 10, 2025
img
বেইজিং চুক্তি বাস্তবায়নে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে সৌদি আরব, ইরান ও চীন Dec 10, 2025
img

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

কুন্দের জোড়া গোলে ফ্রাঙ্কফুর্টকে হারাল বার্সেলোনা Dec 10, 2025
img
বেপরোয়া প্রাইভেট কারের ধাক্কায় পিকআপ উল্টে নষ্ট হাজারো ডিম Dec 10, 2025
img
ঝিনাইদহে ২ ট্রাকের সংঘর্ষ, প্রাণ গেল চালকের Dec 10, 2025
img
রাবিতে ভর্তির পরীক্ষা শুরু ১৬ জানুয়ারি, পৌনে ৩ লাখের আবেদন Dec 10, 2025
img
রাজধানীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ৭ Dec 10, 2025
img
অসীম কুমার উকিলের ৬ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ Dec 10, 2025
img
চাল নিয়ে ভারতের ‘টুঁটি চেপে’ ধরতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প Dec 10, 2025
img
পদোন্নতি পাচ্ছেন শেখ হাসিনার পক্ষে বিবৃতি দেওয়া শিক্ষক Dec 10, 2025
img
টাঙ্গাইলে কাভার্ডভ্যানের পেছনে মালবাহী ট্রাকের ধাক্কা, প্রাণ গেল ২ জনের Dec 10, 2025