২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়ার দাবিতে টানা চারদিন আন্দোলন করছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। এ দাবিতে দেশের সব এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে কর্মবিরতি। আর ঢাকায় অবস্থানরত শিক্ষকরা বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে লং মার্চ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
শিক্ষকদের লাগাতর আন্দোলনের মুখে বুধবার (১৫ অক্টোবর) শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। তাতে অর্থ মন্ত্রণালয় বাড়িভাড়া ৫ শতাংশ অথবা ন্যূনতম দুই হাজার টাকা দিতে ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছে। এর বেশি একবারে সাড়ে পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর বাড়িভাড়া বাড়ানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রাথমিকভাবে ৫ শতাংশ অথবা ন্যূনতম দুই হাজার টাকা বাড়িভাড়া দিলে বছরে সাড়ে নয়শ কোটি টাকা খরচ হবে। পরবর্তী বছর থেকে পর্যায়ক্রমে এ হার বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমপিও শাখার একাধিক কর্মকর্তা দেশের একটি গণমাধ্যমকে জানান, বর্তমানে অর্থ উপদেষ্টা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। কিন্তু শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগের সঙ্গে বুধবারও একাধিকবার যোগাযোগ করেছে। যতদূর জানা যাচ্ছে, শিক্ষা থেকে অর্থে ২০ শতাংশ বৃদ্ধির দাবি করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর ১০ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অর্থ বিভাগ ৫ শতাংশ কিংবা ন্যূনতম দুই হাজার টাকা শিক্ষকপ্রতি ছাড় দিতে পারে।
শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেখানে প্রতি অর্থবছরে রাষ্ট্রের বাজেট ৮ লাখ কোটি টাকা। সেখানে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দিলে প্রায় চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর জন্য ২৩০০ কোটি টাকা বাড়তি খরচ হবে। এ বিষয়ে মানবিক আচরণ করা উচিত।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর আহমেদ বলেন, শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কোনো যৌক্তিক দাবিকে অবহেলা করা ঠিক হবে না। এতে পরিস্থিতি জটিল হবে। রাষ্ট্র ও জাতির ক্ষতি হবে।
বিষয়টি জানতে চাইলে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, আমরা ২০ শতাংশই বাড়িভাড়া চাই। ১৯ শতাংশ দিলেও শিক্ষকরা মেনে নেবে না।
তিনি আরও বলেন, সারাদেশে বর্তমানে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। প্রয়োজনে ৩০ হাজার এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষকরা ঢাকায় এসে অবস্থান নেবেন। তখন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সেই দায় সরকারকে নিতে হবে।
এমকে/এসএন