বোরকা নিষিদ্ধ করে আইন পাস করেছে পর্তুগাল

জনসমাগমপূর্ণ স্থানে বোরকা নিষিদ্ধ করে আইন পাস করেছে পর্তুগালের পার্লামেন্ট অ্যাসেম্বলিয়া ডা রিপাবলিকা। গতকাল শুক্রবার পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটের ভিত্তিতে পাস হয়েছে আইনটি।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, “এখন থেকে দেশের কোনো জনসমাগমপূর্ণ স্থানে এমন কোনো পোশাক বা বস্ত্রখণ্ড কোনো নারী-পুরুষ পরতে পারবেন না, যা মুখাবয়ব বা মুখমণ্ডল ঢেকে রাখে। যদি কেউ এই আইন অমান্য করেন, তাহলে তাকে সর্বনিম্ন ২০০ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৮ হাজার ৪৭৬ টাকা) থেকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৫২০ টাকা) জরিমানা প্রদান করতে হবে।”

পর্তুগালের পার্লামেন্টে কয়েক দিন আগে বিল আকারে প্রস্তাবটি এনেছিল দেশটির কট্টর ডানপন্থি চেগা পার্টি। কয়েক দিন ধরে প্রস্তাবটির পক্ষে-বিপক্ষে তর্ক-বিতর্ক হয়। তর্ক-বিতর্কের সময় চেগা পার্টির এমপিরা বলেছেন, পর্তুগালে অধিকাংশ মেয়ে এবং নারী স্বেচ্ছায় বোরকা পরেন না। পারিবারিক ও ধর্মীয় চাপের কারণে তারা বোরকা পরতে বাধ্য হন। এটা একধরনের পীড়ন বা জুলুমবাজি।

তারা আরও বলেন, পর্তুগালের সামাজিক মূল্যবোধ ও রীতিনীতিতে মুখমণ্ডল উন্মুক্ত রাখাকে সম্মান করা হয়। যেসব অভিবাসী ইতোমধ্যে দেশের নাগরিক হয়েছেন এবং যারা নাগরিকত্বের অপেক্ষায় আছেন, তাদের অবশ্যই পর্তুগালের সামাজিক রীতিনিতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

অন্যদিকে বিরোধীরা বলেন, নতুন এই বিলটি বৈষম্যমূলক। পর্তুগালের সামাজিক মূল্যবোধে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টি স্বীকৃত এবং নতুন বিলে ধর্মীয় স্বাধীনতায় আঘাত হানা হয়েছে। তারা আরও বলেন, আইনটি পাস হলে দেশে বসবাসরত একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় (মুসলিম) চাপ অনুভব করবেন।

কয়েক দিন তর্ক-বিতর্ক চলার পর শুক্রবার পার্লামেন্টে ভোটের জন্য বিলটি তোলার পর সংখ্যাগরিষ্ট এমপি সেটির পক্ষে ভোট দেন। ফলে শুক্রবার থেকেই আইনে পরিণত হয়েছে সেই বিল।

পর্তুগাল অবশ্য ইউরোপের প্রথম দেশ নয়, যারা আইন করে বোরকা নিষিদ্ধ করল। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে প্রথম আইন জারি করে জনসমাগমপূর্ণ স্থানে বোরকা নিষিদ্ধ করে বেলজিয়াম। ২০১০ সালে এ আইন পাস হয় ব্রাসেলসের পার্লামেন্টে। তারপর ২০১৬ সালে ফ্রান্স, ২০১২ সালে নেদারল্যান্ডস, ২০১৬ সালে বুলগেরিয়া, ২০১৭ সালে অস্ট্রিয়া এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডে এই আইন পাস ও কার্যকর করা হয়েছে।

সূত্র : পর্তুগাল ডট কম

আরপি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আহত জুলাই যোদ্ধা আতিকুলের সার্বিক খোঁজ নিলেন নাহিদ ইসলাম Oct 18, 2025
img
আরাউহোর শেষের গোলে রোমাঞ্চকর জয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা Oct 18, 2025
img
চট্টগ্রাম বন্দরে ১২০০ টন পণ্য নিয়ে জাহাজডুবি Oct 18, 2025
img
রেকর্ডগড়া বোলিংয়ে বাংলাদেশকে জেতালেন রিশাদ, ম্যাচশেষে আবেগঘন প্রতিক্রিয়া Oct 18, 2025
img
মিষ্টি কম দেয়া নিয়ে টর্চ জ্বালিয়ে দুই গ্রামের সংঘর্ষ Oct 18, 2025
img
আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের আপিল প্রত্যাখ্যান, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল Oct 18, 2025
img
‘জুবিনদা আমার কণ্ঠ ছিলেন’ মন্তব্যে কটাক্ষের মুখে দেব Oct 18, 2025
img
তারকাদের ইনজুরিতে নতুনদের সুযোগ দেখছেন বার্সা কোচ হ্যান্সি ফ্লিক Oct 18, 2025
img
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আভাস Oct 18, 2025
img
জনগণের বিশ্বাস অগ্নিকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত: ফখরুল Oct 18, 2025
img
তদন্ত শেষে বোঝা যাবে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে: ফায়ার সার্ভিসের ডিজি Oct 18, 2025
সুস্থতার জন্য নবীজি যে আমল করতেন | ইসলামিক টিপস Oct 18, 2025
সালমানের চোখে ভবিষ্যতের সুপারস্টার আরিয়ান খান Oct 18, 2025
সবার সামনে রিয়া মনিকে তালাক দিলেন হিরো আলম! Oct 18, 2025
প্রস্তুত করা হচ্ছে রাকসু ভবন, রোববার বসতে পারবেন নির্বাচিতরা Oct 18, 2025
img
২৫০ কারখানার পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি : বিজিএমইএ সভাপতি Oct 18, 2025
img
অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে বলকান অঞ্চলে ব্রিটিশ সীমান্তরক্ষী Oct 18, 2025
img
আবুধাবি টি-১০ লিগে দল পেলেন নাহিদ ও সাইফ Oct 18, 2025
img
পরীমণিকে ঘিরে স্মৃতিচারণ সংগীত শিল্পী ইমরানের Oct 18, 2025
img
পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের হুমকির বিপরীতে ভারতের পাল্টা হুঁশিয়ারি Oct 18, 2025