মানবপাচারকারীদের দৌরাত্ম্য ও যুক্তরাজ্যমুখী অভিবাসীদের প্রবাহ ঠেকাতে প্রথমবারের মতো বলকান অঞ্চলে সীমান্তরক্ষী পাঠিয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটির সীমান্ত কর্মকর্তারা মানবপাচারকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য নতুন কৌশল নির্ধারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্সের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে।
ড্রোন ও বায়োমেট্রিক প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিবাসীদের ওপর নজরদারি বাড়াতে পশ্চিম বলকান অঞ্চলীয় দেশগুলোর সীমান্তরক্ষীদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছে যুক্তরাজ্য। এমনকি, ভিসা ও পাসপোর্ট জালিয়াতি শনাক্ত করার কৌশলও তাদের সঙ্গে ভাগ করছে ব্রিটিশ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।
লন্ডনের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে পশ্চিম বলকান অঞ্চল ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ। এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবিলায় নতুন উদ্যোগ নেওয়া।
এই প্রসঙ্গে শাবানা মাহমুদ বলেন, অনিয়মিত অভিবাসনের রুটগুলো বন্ধে আমি যুক্তরাজ্যের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছি। বলেছি, পশ্চিম বলকান অঞ্চলে অভিযান পরিচালনাসহ তারা যেন সব ধরনের বিকল্পগুলো বিবেচনায় রাখে।
তিনি বলেন, আমাদের সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমি প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমি ঠিক সেটাই করছি। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর পশ্চিম বলকান অঞ্চলীয় অভিবাসন রুট ব্যবহার করে অন্তত ২২ হাজার মানুষকে পাচার করেছে মানবপাচারে জড়িত চক্রগুলো।
পশ্চিম বলকান অঞ্চলীয় দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে নর্থ মেসিডোনিয়া, মন্টেনেগ্রো, সার্বিয়া, আলবেনিয়া, বসনিয়া ও হ্যার্ৎসেগোভিনা এবং কসোভো। ইউরোপজুড়ে অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে এই অঞ্চলটি ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
যুক্তরাজ্যের সীমান্ত নিরাপত্তা কমান্ডার মার্টিন হিউইট বলেছেন, বলকান অঞ্চলের পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য নাইট ভিশন গগলস (অন্ধকারে দেখার বিশেষ চশমা) ও ড্রোন সরবরাহ করবে যুক্তরাজ্য, যেন তারা মানবপাচারকারী চক্রগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারেন।
গত সপ্তাহে সারায়েভোতে বলকান সীমান্ত পুলিশ প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেছেন তিনি। সেখানেই এমন ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ এই কর্মকর্তা। আগামী সপ্তাহে পশ্চিম বলকান দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গেও একটি সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ওই সম্মেলন থেকে যুক্তরাজ্যে অনিয়মিত পথে আসা অভিবাসীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আরও পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা রয়েছে। ইনফোমাইগ্রেন্টস।
টিজে/টিকে