জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে বৈঠক করেছে সফররত ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) প্রতিনিধি দল।
নেতাদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, দেশের চলমান রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণ নিয়ে এই বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজি সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন ও উপদেষ্টা মেজর (অব.) মো. মাহফুজুর রহমান।
অন্যদিকে আইআরআই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন আইআরআই বোর্ড সদস্য ক্রিস্টোফার ফাসনার এবং সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির ইন্দো-প্যাসিফিক সিকিউরিটি প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো লিসা কার্টিস। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন কারিগরি বিশেষজ্ঞ জেসিকা কিগান, আবাসিক প্রোগ্রাম ডিরেক্টর স্টিভ সিমা, প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জেমি স্পাইকারম্যান, প্রচারণা ও পরামর্শদাতা জন ফ্লুহার্টি, পরামর্শক ডারিন বিয়েলেকি, অমিতাভ ঘোষ ও সাইদা মুশরেফা জাহান।
বৈঠকে দেশের চলমান রাজনৈতিক ও সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের দেশের বর্তমান আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে বলেন, বর্তমান সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সব মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। ফলে এই সরকারের অধীন কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। তিনি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে অত্যন্ত নাজুক উল্লেখ করে বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
জি এম কাদের আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যদি দেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না হতে পারে, তাহলে রাজনৈতিক স্থিতিশীল সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। তখন দেশে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হবে এবং গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে একটি বৈষম্যমূলক সমাজ গঠনের যে জন-আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল তা আজ ধুলায় মিশে গেছে। তিনি সরকারের ‘ঐকমত্য কমিশন’-এর কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, বাংলাদেশের নিবন্ধিত ৫৫টি দলের মধ্যে মাত্র ২৫টি দলকে ঐকমত্য কমিশন ডেকেছে। বাকি অর্ধেকেরও বেশি নিবন্ধিত দলকে (যাদের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই) বাদ রেখে সরকার নিজেদের প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
তিনি সংবিধানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, দেশের এই অবস্থায় যেহেতু সংবিধানে গণভোটের কোনো অপশন নেই, তাই এই মুহূর্তে গণভোট করা হবে অসাংবিধানিক। তবে জাতির প্রয়োজনে যদি গণভোটের প্রয়োজন হয়, তবে তা অবশ্যই সংসদে পাস করে করা যেতে পারে বলে তিনি অভিমত দেন।
কেএন/টিকে