যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বৈরী শত্রু এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া সাম্প্রতিক ইউক্রেন-সংক্রান্ত বিভিন্ন পদক্ষেপ কার্যত রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। আর এই বিষয়টি এখন একেবারে পরিষ্কার বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কিন নির্বাচনী প্রচারেরে সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন। তার প্রশাসন এই যুদ্ধকে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে এক ধরনের ‘‘প্রক্সি যুদ্ধ’’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।
রাশিয়াকে ‘‘কাগুজে বাঘ’’ আখ্যা দিয়ে বুধবার ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে নির্ধারিত শীর্ষ বৈঠক বাতিল করেছেন। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় রাশিয়ার বৃহত্তম দুই তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান মেদভেদেভ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের শত্রু, আর তাদের বাচাল ‘শান্তিদূত’ এখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের পথে নেমেছেন।
তিনি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইউক্রেন-সংক্রান্ত নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। এখন ট্রাম্প পুরোপুরি উন্মত্ত ইউরোপের সঙ্গে তাল মিলিয়েছেন।
১৯৯৯ সালের শেষ দিন থেকে রুশ রাজনীতির সর্বময় ক্ষমতাধর নেতা পুতিন; তিনিই দেশটির নীতি নির্ধারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্পকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বেশ আক্রমণাত্মক মন্তব্য করার জন্য মেদভেদেভের পরিচিতি রয়েছে।
চলতি বছরের আগস্টে ট্রাম্প বলেছিলেন, মেদভেদেভের যুদ্ধ-সংক্রান্ত উসকানিমূলক মন্তব্যের জবাবে তিনি দুটি মার্কিন পারমাণবিক সাবমেরিন রাশিয়ার কাছাকাছি পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মেদভেদেভ বলেন, ‘‘ট্রাম্পের দোলকের এই নড়াচড়া এখন রাশিয়াকে অপ্রয়োজনীয় আলোচনার তোয়াক্কা না করেই, ইউক্রেনে বিস্তৃত পরিসরে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছে।’’
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, আমাদের এমন একটি আলোচনাভিত্তিক সমাধান প্রয়োজন, যা সংঘাতের মূল সঙ্কটের অবসান ঘটাবে এবং ইউরেশীয় ও বৈশ্বিক টেকসই নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রেক্ষিতে শান্তি নিশ্চিত করবে।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা নতুন করে বিপরীতমুখী ফল ডেকে আনবে বলেও হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন যদি আগের মার্কিন প্রশাসনের পথ অনুসরণ করে, তাহলে সেটিও ব্যর্থ হবে।
সূত্র: রয়টার্স।
টিজে/টিকে