বাংলাদেশ দূতাবাস, ত্রিপলির তত্ত্বাবধানে এবং লিবিয়ার জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকারের সার্বিক সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনায় ত্রিপলি থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশকারী ৩০৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দেশে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যাবাসিত এসব অভিবাসী আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এটি লিবিয়া সরকারের সহায়তায় পরিচালিত দ্বিতীয় চার্টার ফ্লাইট বলে জানিয়েছে ত্রিপলিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
প্রত্যাবাসন কার্যক্রম উপলক্ষে রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার দূতাবাস প্রাঙ্গণে অভিবাসীদের বিদায় জানান। এ সময় দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মো. রাসেল মিয়া এবং অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বিদায়কালে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস লিবিয়ায় অবস্থানরত অভিবাসীদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে ইচ্ছুক নিবন্ধিত অভিবাসীদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় লিবিয়া সরকারের সহযোগিতায় গত ৯ অক্টোবর প্রথম দফায় ৩০৯ জন এবং আজ দ্বিতীয় দফায় আরও ৩০৯ জন বাংলাদেশিকে দেশে পাঠানো সম্ভব হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত অভিবাসীদের দেশে ফিরে মানবপাচার প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। তিনি অনিয়মিত উপায়ে বিদেশযাত্রার ঝুঁকি ও ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে স্থানীয়ভাবে সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন এবং দালালচক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সবাইকে উৎসাহিত করেন। এ বিষয়ে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি আশ্বস্ত করেন।
মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত বলেন, প্রত্যেক নাগরিক দেশের সম্পদ। তাই কেউ যেন ভবিষ্যতে অবৈধ পথে বিদেশে না যায়। বরং বৈধ উপায়ে, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে বিদেশে গিয়ে দেশের সম্মান, মর্যাদা ও উন্নয়নে অবদান রাখার আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত লিবিয়ার জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকার, বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহযোগিতা ও সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস ও লিবিয়া সরকারের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা ও সমন্বয়ের ফলেই বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রত্যাবাসিত বাংলাদেশিরা এর আগে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার জন্য দূতাবাসে আবেদন করেছিলেন। পরবর্তীকালে দূতাবাস লিবিয়া সরকারের সহযোগিতায় তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রস্তুত, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বহির্গমন ছাড়পত্র সংগ্রহসহ সব প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।
একই প্রক্রিয়ায় আগামী ৩০ অক্টোবর মিসরাতা ও ত্রিপলি থেকে নিবন্ধিতদের মধ্যে অবশিষ্ট আরও তিন শতাধিক বাংলাদেশিকে দেশে প্রত্যাবাসনের উদ্যোগে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
এমকে/এসএন