রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেছেন, ‘অভিযোগের আঙ্গুলগুলো ঘুরে ফিরে একে অপরের দিকে যাচ্ছে। ফলে জানালা খুলে দেখা যাচ্ছে নির্বাচনের প্রাক্কালে আস্থার সংকট। যেখানে প্রতিটি পক্ষই মনে করছে রাষ্ট্রযন্ত্র তার বিরুদ্ধে কাজে লাগতে পারে। এই সংকটের সমাধান কাগজে নয়, আচরণে। আর এখানেই অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা প্রশাসনিক দৃঢ়তা পরীক্ষায় পড়েছে।’
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিওতে তিনি এসব কথা বলেন।
জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, বিএনপি সরাসরি প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছে, সরকার যেন পুরোপুরি নিরপেক্ষ ভূমিকা নেয় এবং দলীয় ঘনিষ্ঠ উপাদানগুলোকে দূরে রাখা হয়। এটাই এখন তাদের প্রধান বার্তা।
জামায়াতের অভিযোগ আরো সরাসরিউপদেষ্টা পরিষদের ভেতর থেকে কিছু ব্যক্তি প্রধান উপদেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছেন এবং একটি দলের পক্ষ নিয়ে কাজ করছেন। তারা চাইছে নভেম্বরের শেষ দিকে গণভোট করে জুলাই সনদকে জনগণের অনুমোদন দেওয়া হোক। পরে তার ভিত্তিতে নির্বাচন হোক। এনসিপিও বলছে, নির্বাচন কমিশনের আচরণে পক্ষপাত আছে। পুনর্গঠন দরকার। আর তাদের জন্য শাপলা প্রতীক না হলে নির্বাচনে যাওয়া হবে না।’
জিল্লুর বলেন, ‘২০২৪-এর জুলাই আগস্টের তুমুল অস্থিরতা, রক্তপাত আর ছাত্রজনতার আন্দোলনে দীর্ঘদিনের একচ্ছত্র ক্ষমতার অবসান ঘটে। সেই ধারাবাহিকতায় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। যার লক্ষ্য অস্থিরতার অবসান ঘটিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন।
সরকার গঠনের সময় বেসামরিক সমাজের অনেকে এমনকি ছাত্রনেতাদেরও পরামর্শক হিসেবে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকেই কেউ কেউ দল গঠন করে রাজনীতিতে নেমেছেন।’
জিল্লুর আরো বলেন, ‘এই দুই তীরের যাতায়াত নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল। রাষ্ট্রীয় নিরপেক্ষতায় এর প্রভাব পড়বে কি না? দেশি বিদেশি প্রতিবেদনগুলোতে এই দোলাচলের কথা বারবার এসেছে। নির্বাচনের মুখে এখন যে নতুন ঘূর্ণাবর্ত তা তিনটি কেন্দ্রে ঘুরছে। প্রথমত, উপদেষ্টা পরিষদের কে কোথায় পক্ষপাত করছেন এই অভিযোগ। দ্বিতীয়ত, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও পুনর্গঠন প্রশ্ন। তৃতীয়ত, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি অধ্যাদেশ না সংবিধান বহির্ভূত বিশেষ আদেশ, নাকি সরাসরি গণভোটের মধ্য দিয়ে জনমতের ছাপ বসানো। এই তিন কেন্দ্রিক গণযোগ একটি সংকেত দেয়, তা হলো আস্থার সংকট।’
কেএন/এসএন