বায়ুদূষণ রোধে দিল্লি সরকারের অভিনব উদ্যোগ

দিল্লির ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণ রোধে প্রথমবারের মতো মেঘ বপনের (ক্লাউড সিডিং) পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত সরকার। দীপাবলির উৎসবকে ঘিরে আতশবাজির ধোঁয়া ও কুয়াশার কারণে রাজধানীর বায়ুমান ভয়াবহ পর্যায়ে নেমে যাওয়ায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দিল্লির আকাশে পরীক্ষামূলক ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়। এ সময় বিশেষভাবে তৈরি মেঘ বপন ফ্লেয়ার নিক্ষেপ করে মেঘের আর্দ্রতা ও প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হয়। দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী মানজিন্দর সিং সিরসা বলেন, এটি মূলত প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা, যাতে বিমান, যন্ত্রপাতি ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয় ও সক্ষমতা যাচাই করা হয়েছে।

তিনি জানান, পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক হলে দিল্লিতে খুব শিগগিরই কৃত্রিম বৃষ্টির বাস্তব প্রয়োগ করা হবে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো বাতাসে জমে থাকা ধূলিকণা ও দূষিত গ্যাসকে নিচে নামিয়ে এনে বায়ু শুদ্ধ করা।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৮, ২৯ ও ৩০ অক্টোবর মেঘ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি পরিস্থিতি অনুকূল থাকে, তাহলে ২৯ অক্টোবরই দিল্লিতে প্রথম কৃত্রিম বৃষ্টি ঘটবে।

তিনি আরও বলেন, এটি কেবল প্রযুক্তিগতভাবে ঐতিহাসিক উদ্যোগ নয় বরং দিল্লির দূষণ মোকাবিলায় বৈজ্ঞানিক সমাধান হিসেবে এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।

দীপাবলি উৎসবের সময় আতশবাজি পোড়ানোর পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোর কৃষিজ অবশিষ্ট পোড়ানো, শিল্পপ্রদূষণ ও কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্গমন মিলে দিল্লির বাতাস গত কয়েক দিনে বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেছে। আবহাওয়ার ঠান্ডা ও বায়ুপ্রবাহের অভাবের কারণে দূষণ আরও ঘনীভূত হচ্ছে।

সরকারি বায়ুমান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এয়ার কোয়ালিটি আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিন দিল্লির বায়ু ‘অত্যন্ত খারাপ থেকে খারাপ’ পর্যায়েই থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিল্লির ১ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি মানুষের এই মহানগরীতে বায়ুদূষণের মূল কারণ হলো-আবহাওয়ার অনুকূল না থাকা, শীতকালে কুয়াশা ঘন হওয়া, এবং দূষণ সৃষ্টিকারী কার্যক্রমের লাগামহীনতা। কৃত্রিম বৃষ্টি সফল হলে এটি হতে পারে দিল্লির দূষণ সংকট মোকাবিলার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

 টিজে/টিকে 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বায়ু দূষণ কমাতে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের উদ্যোগ Oct 25, 2025
img
‘জংলি বিল্লি নয়, প্রিয়াঙ্কা আমার পোষা ইঁদুর’, দেশি গার্ল নিয়ে মন্তব্য শাহরুখের! Oct 25, 2025
img
জালিমের কারাগার থেকে আল্লাহ আমাকে মুক্ত করেছেন: কায়কোবাদ Oct 25, 2025
img
জাহ্নবী কাপুরের সিনেমা বিরতি Oct 25, 2025
img
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার শঙ্কা Oct 25, 2025
img
সাত বছরের বিরতির পর আবারও জিম্বাবুয়ের দলে ক্রেমার Oct 25, 2025
img
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে এনসিপি Oct 25, 2025
img
২০১১ সালের পর পিটবুলের প্রথম ভারতের সফর Oct 25, 2025
img
এবার নতুন গান ‘কবুল’ দিয়ে মুগ্ধ করলেন ইমরান–ইয়ামি Oct 25, 2025
img
‘দৃশ্যম ৩’ থেকে সরে দাঁড়ালেন অভিনেতা পরেশ রাওয়াল Oct 25, 2025
img
'কান্তারা: চ্যাপ্টার ১' -এর রূপান্তরে নৃশংসতা, ভক্তদের চমকে দিল রিশব শেট্টি Oct 25, 2025
img
গাজায় যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণে ড্রোন ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র Oct 25, 2025
img
ফেনীতে পুলিশের তিন দিনের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ৬০ Oct 25, 2025
img
হাসিনা আমলে গণতন্ত্র অনুপস্থিত ছিল, এখনো ফেরেনি : মাসুদ কামাল Oct 25, 2025
img
প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি করছে বাংলাদেশ Oct 25, 2025
img
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গুলিতে আহত বিএনপি নেতা, পাঠানো হলো ঢাকায় Oct 25, 2025
img
পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই: সুপ্রদীপ চাকমা Oct 25, 2025
img
ল্যাটিন আমেরিকায় রণতরী মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র: পেন্টাগন Oct 25, 2025
img

এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই

আফগানদের বিপক্ষে খেলবেন হামজা চৌধুরী Oct 25, 2025
img
গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে ৮ রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ঘোষণা Oct 25, 2025