জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কবলে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে সেপ্টেম্বর মাসে ভোক্তা পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৩ শতাংশ-যা চলতি বছরে জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হার।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ইউএস সরকারি পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যদিও এই হার অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসের চেয়ে কিছুটা কম।

সেপ্টেম্বরে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ২.৯ শতাংশ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শুল্ক আরোপ ও পণ্যমূল্য বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে দেশটিতে। বিশেষত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ধারাবাহিক শুল্ক নীতির সঙ্গে এ বৃদ্ধির সময়কাল মিলে গেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে মাংসের দাম কমাতে আর্জেন্টিনা থেকে গরুর মাংস আমদানির পরিকল্পনা ঘোষণা করায় স্থানীয় খামারিরা ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

অন্যদিকে, ডিমের দাম সেপ্টেম্বর মাসে ৫ শতাংশ কমেছে, যা এক বছর আগের তুলনায় প্রায় ১ শতাংশ কম। তবে কফির দাম বেড়েছে ১৯ শতাংশ, যা দৈনন্দিন ব্যয়ের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, অর্থনীতিবিদদের অনুমানের চেয়ে মুদ্রাস্ফীতি কম আসা ‘আমেরিকান পরিবারগুলোর জন্য সুখবর।’

প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, চলমান সরকারি শাটডাউনের কারণে অক্টোবর মাসে হয়তো নতুন কোনো মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশ করা যাবে না, যা বাজার ও ব্যবসা খাতে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে একদিকে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, অন্যদিকে কর্মসংস্থান কমছে-যা অর্থনীতিকে ‘স্ট্যাগফ্লেশন’-এর ঝুঁকিতে ফেলেছে। ফেডারেল রিজার্ভের জন্যও এটি একটি কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুদের হার বাড়ালে অর্থনীতি মন্থর হয়ে যেতে পারে, আবার চাকরির বাজারে গতি ফেরাতে হার কমালে ব্যয় বাড়বে এবং মুদ্রাস্ফীতি আরও ত্বরান্বিত হবে।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সেপ্টেম্বরে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ায় ফেডের পরবর্তী সভায় আবার হার কমানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুল্কনীতির প্রভাব মুদ্রাস্ফীতিতে আংশিক ভূমিকা রাখছে, তবে মূলত আবাসন ও খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণেই এই ঊর্ধ্বগতি।

আগামী নভেম্বর থেকে চীন থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিলে বাজারে নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এখন এক কঠিন ভারসাম্যের সন্ধানে।

টিজে/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ঐকমত্য কমিশনের সব ডকুমেন্ট উন্মুক্ত থাকা দরকার : প্রধান উপদেষ্টা Oct 27, 2025
img
মেয়াদ শেষ হলেও প্রয়োজনে সরকারকে ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করব : আলী রীয়াজ Oct 27, 2025
img
৮ম বার নির্বাচিত হলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট Oct 27, 2025
img
শাহরুখ, বিরাটদের মতো দামী পানি পান করেন শেহনাজ়, কিন্তু পাননি ভালো ফল Oct 27, 2025
img
ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল লেখক ও সাংবাদিক মনিরুজ্জামানের Oct 27, 2025
img
দেশের বাজারে রুপার দামে বড় পতন! Oct 27, 2025
img
যুবলীগের সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলার রায় কাল Oct 27, 2025
img
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ১ম টি-টোয়েন্টিতে ১৬ রানে হারল বাংলাদেশ Oct 27, 2025
img
শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করতে হবে, না হলে পাস করা যাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা Oct 27, 2025
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে অভিযান, জুয়া চক্রে আঘাত Oct 27, 2025
img
একসময় অতিরিক্ত মদ্যপান, এখন নিয়ন্ত্রণে অজয় দেবগন Oct 27, 2025
img
৪ বছর পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরলেন আফগান নারীরা Oct 27, 2025
অপু-পরী বন্ধুত্বে জটিলতার রহস্য উন্মোচন Oct 27, 2025
img
২ বছর পর জরুরি অবস্থা বাতিল করল নেতানিয়াহুর দেশ Oct 27, 2025
শ্রাবন্তীর উদার আচরণে ভক্তরা মুগ্ধ Oct 27, 2025
শ্রাবন্তীর উদার আচরণে ভক্তরা মুগ্ধ Oct 27, 2025
ঢাকা-১৯ আসনে কার জনপ্রিয়তা বেশি? Oct 27, 2025
'ধানের শীষকে বিজয়ী করতে জীবন বাজি রেখে কাজ করবো' Oct 27, 2025
ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোকে নিয়ে জোট করতে চায় বিএনপি Oct 27, 2025
img
সৈয়দপুরে বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Oct 27, 2025