সম্প্রতি ‘আওয়ামী লীগের পালিয়ে যাওয়া নেতাকর্মীদের স্ত্রীদের ওপর জামায়াতের হক আছে’ শীর্ষক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা পর্যায়ের এক নেতার নামে চালিয়ে দেওয়া এক বক্তব্যকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
বিষয়টিসহ জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে চলমান প্রোপাগান্ডা নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদি সময়ে জামায়াত-শিবিরকে সিস্টেমেটিকভাবে ভিলিফাই করা হয়েছিল। মিথ্যার সাথে আরও মিথ্যা মিশিয়ে একধরনের ফিকশান বানানো হয়েছিল। দুঃখজনক হলো- অনেকে এখনো একই কাজ করতে চাইছেন।’
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা গালিব বলেন, ‘গতকালকে (২৬ অক্টোবর) দেশের একটি গণমাধ্যমের এক টকশোতে আমার একজন সহ-আলোচক বললেন, সিরাজগঞ্জ জামায়াতের সেক্রেটারি নাকি বলছেন, ‘আওয়ামী লীগের পালিয়ে যাওয়া লোকদের স্ত্রীদের ওপর জামায়াতের হক আছে’। আজকে সিরাজগঞ্জ জামায়াতের সেক্রেটারি আমাকে ফোন দিয়ে জানালেন, এ রকম কোনো কথা উনি বলেন নাই। আমি একটা ভিডিওতে দেখলাম উনি বরং বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ ভোটাররা ৫ আগস্টের পরে আমাদের দ্বারা কোনো ক্ষয়-ক্ষতির শিকার হন নাই, এজন্য তারা আমাদের ভোট দিতে পারে’।
প্রমাণ হাজির অথবা ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন যিনি অভিযোগ করছেন যে, সিরাজগঞ্জ জামায়াতের সেক্রেটারি ওই কথা বলছেন, তার প্রমাণ হাজির করা উচিত। আর যদি যাচাই-বাছাই ছাড়া ফেসবুকে ফটোকার্ড দেখে ভুল করে এরকম অভিযোগ করে থাকেন, তাহলে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া উচিত’।
এ সময় জামায়াত নেতা শফিকুল ইসলাম মাসুদের এক বক্তব্যকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন প্রসঙ্গে হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী এই অধ্যাপক বলেন, ‘আজকে দেশের একটি গণমাধ্যম এর আরেকটা টকশোতে বিএনপি চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা জামায়াতের সমালোচনা করতে গিয়ে বললেন, জামায়াত নেতা শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা হলে শিবিরের যে পরিমাণ অস্ত্র আছে, তা দিয়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় দখল করা যাবে। অথচ, আমি খালেদ মহিউদ্দিনের সঙ্গে এক টকশোতে মাসুদ ভাইকে বলতে শুনেছি, এই কথা শিবিরের ব্যাপারে অন্যরা বলে বেড়াইত- উনি সেটাই কোট করেছিলেন মাত্র।’
মিথ্যা, প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর বিষয়ে মির্জা গালিব বলেন, ‘এক রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা আরেক রাজনৈতিক দলের সমালোচনা করবে- এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সমালোচনা করতে গিয়ে ইচ্ছা করে মিথ্যা কথা বলবে, প্রোপাগান্ডা ছড়াবে- এটা অগ্রহণযোগ্য। মিথ্যা কথা বলে, প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যদি কাউকে থামিয়ে রাখা যেত, তাহলে তো আওয়ামী লীগই ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকত!’
এসএস/টিকে