বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ফ্যাসিবাদী আমলে জীবাশ্ম জ্বালানির কথা বলে টাকা হরিলুট হয়েছে। বিদ্যুৎখাতের তিনভাগের একভাগ লুট হয়ে গেছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে 'ক্যাব যুব সংসদের’ আয়োজনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের ‘ইনডেমনিটি আইন’ করা হয়েছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের জন্য। বিদ্যুতে লুণ্ঠনের একটি ঝড় তখন বয়ে গিয়েছিল। চৌর্যবৃত্তিকে আইনিকরণ করার জন্য, সেটা করা হয়েছিল। অবশ্যই এ আইন বিলুপ্ত করতে হবে। পরবর্তী সরকারে বিএনপি যদি আসে বিএনপি অবশ্যই এ আইন বিলুপ্ত করবে।
রিজভী আরও বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি রূপান্তর মানব সভ্যতাকে বাঁচাতে অতি জরুরি। সেটা কথা দিয়ে বা বিবৃতি দিয়ে বলার কিছু নেই। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা কপ সম্মেলনে থ্রি-জিরোর কথা বলেছেন। যার মধ্যে কার্বন শূন্যের কথা বলেছেন। অন্যান্য অনেক দেশ সেখানে হাতে তালি দিয়ে আমাদেরকে সমর্থন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এ বছর আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি কমেছে। যেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। ফ্যাসিবাদী আমলে জীবাশ্ম জালানির কথা বলেই টাকা হরিলুট করেছে। বিদ্যুৎ খাতের ৩ ভাগের এক ভাগ টাকা লুট হয়ে গেছে। সেখানে নবায়ন যোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন যে গণবিরোধী সরকার করবে না সেটাই সাভাবিক। এ ক্ষেত্রে কাঁচা টাকা পকেটে আসবে না বলেই তারা সেদিকে মনোযোগ দেননি।
বিএনপির ৩১ দফায় পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন প্রশ্ন হলো পরবর্তী সরকার কি করবে? আমাদের (বিএনপি) ইশতেহার এখনো না আসলেও আমাদের দলের প্রধান তার ৩১ দফায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা বলেছেন। দেশকে পরিবেশ বান্ধব করতে ২৫ কোটি বৃক্ষ লাগানো হবে এবং তা প্রযুক্তির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হবে বলেও তিনি অঙ্গীকার করেছেন। নদী-খাল-বিলসহ ২০ হাজার কিলোমিটার জলভূমি নাব্যতার কথা বলেছেন। এগুলোকে আগের রূপে ফিরিয়ে আনতে হবে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপাদানের বিষয়ে তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি বলতে আমরা বুঝি তাপ ও বায়ু। আমাদের দেশে অন্যান্য দেশের তুলনায় সূর্যের তাপ কম। তবুও যথাযথ দেওয়া হবে। আরেকটি হলো বায়ু। আটলান্টিকের মতো বায়ু আমাদের দেশে নেই তবে আমাদের দেশের প্রযুক্তিবিদরা বিকল্প উপায়ও বলেছেন। ব্রাজিলে আখ থেকে জ্বালানি হয়।
রিজভী নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিষয়ে পরিকল্পনা প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে বলেন, আমাদের সামাজিক অর্থনৈতিক পরিবেশ বিবেচনায় পরিবেশকে সুস্থ্য রাখতে জ্বালানি ব্যাবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্যে এ খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এ সরকার বিভিন্ন চুক্তি করেছে। পুরোনো চুক্তি বাতিল করেছেন। তবে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে সেটা উল্লেখ করা প্রয়োজন।
এ আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ডাকসুর জিএস ও ঢাবি শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ এবং 'ক্যাব যুব সংসদ' এর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।
টিজে/টিএ