মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেতে নিজের চাচা-চাচিকে পিতা-মাতা হিসেবে দেখানোর অভিযোগ ওঠা নাচোলের ইউএনও মো. কামাল হোসেনকে নাচোল উপজেলা থেকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ নিয়োগ শাখা একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
জানা যায়, বুধবার (০৫ নভেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সামিউল আমিন স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নাচোল উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. কামাল হোসেনকে জনস্বার্থে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হলো। এছাড়া প্রজ্ঞাপনটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
তবে এ বিষয়ে জানতে ইউএনও কামাল হোসেনের সরকারি ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জেলা প্রশাসক মোহম্মদ সোলায়মান বলেন, আমি গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। আমি এই জেলায় নতুন যোগদান করেছি। সব উপজেলায় এখনও যাইনি। বিষয়টি নিয়ে পরে বিস্তারিত জানাতে পারবো।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেতে নিজের চাচা-চাচিকে পিতা-মাতা হিসেবে দেখানোর অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নাচোল উপজেলার ইউএনও কামাল হোসেনসহ তার পরিবারের ডিএনএ টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময় দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের ইউএনও কামাল হোসেন মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে বাবা পরিচয়ে প্রতারণা করে কোটা সুবিধা নিয়ে বিসিএসে চাকরি গ্রহণ করেছেন। এছাড়া ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ ব্যবহার করে চাকরি ও অন্যান্য সুবিধা গ্রহণের অভিযোগেও একাধিক তদন্ত চলমান রয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে দুদক মামলা দায়ের করে। মামলার সূত্রে জানা যায়, কামাল হোসেন ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সময় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে সুবিধা পেতে নিজের জন্মদাতা পিতা-মাতা মো. আবুল কাশেম ও মোছা. হাবীয়া খাতুনের পরিবর্তে চাচা মো. আহসান হাবীব (বীর মুক্তিযোদ্ধা) এবং চাচি মোছা. সানোয়ারা খাতুনকে পিতা-মাতা হিসেবে উল্লেখ করেন। এই জালিয়াতির মাধ্যমে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, চাকরি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন বলে তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বর্তমানে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে কর্মরত আছেন। এর আগে তিনি মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সিনিয়র সহকারী কমিশনার এবং নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দুদকের চলমান তদন্তে আসামি কামাল হোসেনসহ তার প্রকৃত পিতা-মাতা ও চাচা-চাচীর ডিএনএ পরীক্ষা করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে শিগগিরই পরীক্ষা সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।
আইকে/টিএ