বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘সাধারণত রাজনীতিবিদরা বক্তৃতা দিয়ে চলে যান, কিন্তু বিএনপি নতুন ধারার রাজনীতিতে জনগণের সঙ্গে জবাবদিহিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাজনীতিবিদদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে।’
বুধবার (৫ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব জুলাই বিপ্লব হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল আয়োজিত ‘আমার প্রথম ভোট ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘বৃহৎ সভাগুলোতে বক্তৃতার সময় কমিয়ে, প্রশ্নোত্তর পর্ব দীর্ঘ করা হচ্ছে। ঢাকায় এবং আজ চট্টগ্রামে সুন্দর প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি আমাদের নতুন রাজনীতির সংস্কৃতি। বক্তব্যের শুরুতে সম্বোধনের প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, “যারা স্টেজে আসবেন, মাইকে সরাসরি মূল পয়েন্টে কথা বলবেন। অতিরিক্ত সম্বোধন বা ‘জিন্দাবাদ’ ধ্বনি সময়ের অপচয়। নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের এই সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।” তিনি বিএনপির ভোটদানের কারণও তুলে ধরেন। তার কথায়, বাংলাদেশে প্রথম বহুদলীয় গণতন্ত্র বিএনপি করেছে।
স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরিয়ে এনেছেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। গণতন্ত্রের ইতিহাস বিএনপির সঙ্গে যুক্ত। এ ছাড়া বিএনপি অর্থনৈতিক মুক্তির পথও প্রথম খুলেছে।
বিএনপির পরিকল্পিত অর্থনৈতিক নীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতের মেগাপ্রজেক্ট বাস্তবায়নে আমরা চারটি নীতি অনুসরণ করব—ভ্যালু ফর মানি, রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং পরিবেশ সংরক্ষণ। ১৮ কোটি মানুষের জন্য আমাদের পরিকল্পনা হবে স্বচ্ছ ও সঠিক।’
এর আগে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে ‘যুবসমাজ ও মহিলাদের কর্মসংস্থানের প্রতি পরিকল্পনা’ রয়েছে বলে জানান আমীর খসরু। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ কাজ করে খেতে পারেন। কিন্তু যারা এসএসসি, এইচএসসি বা বিএ পাস করেছেন তাদের ম্যানুয়াল কাজ করতে সমস্যা হয়। তাই আমরা তাদের আইটি স্কিলে ডেভেলপ করব। আইটি রিলেটেড কাজে ৬ মাস বা এক বছর প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর তারা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে সক্ষম হবে। মহিলারা অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও কাজ করতে পারবেন। আমাদের লক্ষ্য—সবাইকে কর্মসংস্থানে আনতে হবে এবং অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়িত করা।’
আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, ‘আমরা চাই, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যুবসমাজ থেকে শুরু করে সবাই অর্থনৈতিক গণতন্ত্রায়নের সঙ্গে যুক্ত থাকুক। বাড়িতে বসেও নারী বা পুরুষরা তৈরি পণ্য ডিজাইনিং ও ব্র্যান্ডিং সাপোর্টের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবে। এতে পণ্যের মান বৃদ্ধি পাবে এবং অর্থনীতিতে বিশাল অবদান, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য আরো বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে জেন-জি। বিএনপি ও তারেক রহমান সেটি বুঝে পরিকল্পনা করেছে। আমাদের আগামীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিকল্পনায় সব কিছু অন্তর্ভুক্ত আছে।’
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মো. আবু হোরায়রার ও সাধারণ সম্পাদক এম রাজিবুল ইসলাম তালুকদার বিন্দুর পরিচালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও হাটহাজারী সংসদীয় আসনের বিএনপির মনোনিত প্রার্থী ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য বিচারপতি ফয়সল মাহমুদ ফয়জী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য রাঙ্গুনিয়া থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হুম্মাম কাদের চৌধুরী, বিএনপির আর্ন্তজাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, ব্যারিস্টার ফয়সাল দস্তগীর প্রমুখ।
আইকে/টিএ