জীবিকার তাগিদে উন্নত জীবনের আশায় প্রায় ১৩ মাস আগে ৭ লাখ টাকা লোন ও ধারদেনা করে ভিয়েতনামে পাড়ি দিয়েছিলেন পরিবারের মেঝো ছেলে পারভেজ মণ্ডল (২৫)। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না তার। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ভিয়েতনামে এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি।
নিহত পারভেজ মণ্ডল রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের মদাপুর গ্রামের কিয়ামউদ্দিন মণ্ডলের ছেলে। পারভেজের বাবা কিয়ামউদ্দিন মণ্ডল পেশায় ভ্যানচালক, মা হাসি বেগম গৃহিণী। তিন ভাইবোনের মধ্যে পারভেজ ছিলেন মেঝো। বড় বোন স্বর্ণা খাতুন এবং ছোট ভাই ইয়া হাবিব বর্তমানে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে ও উন্নত জীবনের আশায় পারভেজ প্রায় ১৩ মাস আগে ৭ লাখ টাকা ঋণ ও ধারদেনা করে মা-বাবা, বড় বোন ও ছোট ভাইকে রেখে ভিয়েতনামে যান। সেখানে একটি কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা তাকে কোম্পানির পোশাকে সড়কে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ভিয়েতনাম প্রবাসী সাকিব মিয়া পারভেজের মৃত্যুর খবর তার পরিবারকে জানান। এ খবর শোনার পর শোকে ভেঙে পড়েছে পরিবার। পারভেজের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
নিহত পারভেজের বাবা কিয়ামউদ্দিন মণ্ডল বলেন, আমার ছেলে ভিয়েতনামে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। আমি আমার ছেলের মরদেহ দেশে আনতে চাই। সরকার যেন দ্রুত তার মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করে। তিনি স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহুয়া আফরোজ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তার আবেদন পেলে আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করব।
এমআর/টিকে