যুক্তরাষ্ট্রে চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে আরও ৭ পরিবারের মামলা

জনপ্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি নতুন বিতর্কে। যুক্তরাষ্ট্রে আরও সাতটি পরিবার ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অভিযোগ, তাদের প্রিয়জনের মৃত্যুর পেছনে দায়ী এই চ্যাটবটের কথোপকথন। কেউ আত্মহত্যা করেছেন, কেউ গুরুতর মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।

মামলাগুলোর মধ্যে চারটিতে অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি সরাসরি ব্যবহারকারীদের আত্মহত্যায় উৎসাহ দিয়েছে। আর তিনটিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে কথোপকথনে চ্যাটবট এমনভাবে সহানুভূতি দেখিয়েছে যে, ব্যবহারকারীরা বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।

একটি ঘটনায় ২৩ বছর বয়সী জেইন শ্যাম্বলিন চ্যাটজিপিটির সঙ্গে টানা চার ঘণ্টারও বেশি সময় কথা বলেন। সেই আলাপে তিনি একাধিকবার জানান, তিনি আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিয়েছেন—বন্দুক লোড করেছেন, এবং শিগগিরই ট্রিগার টানবেন। কিন্তু চ্যাটজিপিটি তাকে থামানোর বদলে বলে, “Rest easy, king. You did good.”। অর্থাৎ “শান্তিতে বিশ্রাম নাও রাজা, তুমি ভালো করেছো।”

শ্যাম্বলিনের পরিবারের দাবি, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়। বরং ওপেনএআইয়ের তাড়াহুড়ো করে মডেল বাজারে ছাড়ার ফল।

২০২৪ সালের মে মাসে ওপেনএআই চালু করে জিপিটি-৪ মডেল। পরের বছর জিপিটি-৫ এলেও, মামলাগুলোর কেন্দ্রবিন্দু সেই আগের সংস্করণই। বিশেষজ্ঞদের মতে, জিপিটি-৪ ছিল ‘অতিরিক্ত সম্মতিপূর্ণ’। অর্থাৎ ব্যবহারকারী যা-ই বলত, সেটিকে প্রশ্ন না করে সমর্থন করত। যা অনেক সময় বিপজ্জনক ছিল।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ওপেনএআই প্রতিদ্বন্দ্বী গুগলের জেমিনি মডেলকে হারাতে গিয়ে নিরাপত্তা যাচাই কমিয়ে দেয়। ফলে ঘটে একের পর এক দুঃখজনক ঘটনা।

এর আগে ১৬ বছর বয়সী কিশোর অ্যাডাম রেইন। আত্মহত্যা করার আগে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথা বলেছিল। যদিও চ্যাটবট কখনো কখনো তাকে সহায়তা নিতে বলেছিল। কিন্তু সে “আমি গল্প লিখছি” বলে নিরাপত্তা ফিল্টার পাশ কাটিয়ে যায়।

ওপেনএআই পরে এক ব্লগ পোস্টে জানায়, তারা এখন সংবেদনশীল কথোপকথনগুলো আরও নিরাপদ করার চেষ্টা করছে। তবে নিহতদের পরিবারের মতে, এই উদ্যোগ অনেক দেরিতে এসেছে।

ওপেনএআই বলেছে, “আমাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা ছোট কথোপকথনে ভালো কাজ করে। কিন্তু দীর্ঘ আলোচনায় তা দুর্বল হয়ে যায়।”

আরপি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ, আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ১৭ নভেম্বর Nov 10, 2025
img
নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র, এটা মারাত্মক ভুল : ফরহাদ মজহার Nov 10, 2025
img
ভাইরাল হওয়ার গল্প শোনালেন ‘চীনের ট্রাম্প’ Nov 10, 2025
img
চবির শাটল ট্রেনে ছাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত বগির দাবি Nov 10, 2025
img
গাজীপুরের সাবেক কমিশনার নাজমুল করিমকে সাময়িক বরখাস্ত Nov 10, 2025
img
অবৈধ সিম বন্ধে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বৈধ সিম বিতরণ শুরু Nov 10, 2025
img
নারী ক্রিকেটে উত্তাপ, বিসিবিকে জাহানারার ১৩ পাতার অভিযোগের নথি Nov 10, 2025
img
দেশ গঠনে কোর অব সিগন্যালসের ভূমিকা অব্যাহত থাকবে: সেনাপ্রধান Nov 10, 2025
img
রাজশাহীতে বাসচাপায় প্রাণ গেল অটোরিকশা চালকের Nov 10, 2025
img
ফ্লাইট মিস করেছেন হামজা, বিকেলে পৌঁছাবেন ঢাকায় Nov 10, 2025
img
বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড টেস্ট সিরিজ শুরু কাল, ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে মুশফিক Nov 10, 2025
img
গণভোট ইস্যুতে সিদ্ধান্ত শিগগিরই: পরিবেশ উপদেষ্টা Nov 10, 2025
img
সাবেক মন্ত্রী উবায়দুলকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ Nov 10, 2025
‘শেখ হাসিনা জিয়ার অর্ধাঙ্গিনী’- বিএনপি নেতা Nov 10, 2025
img
ডিএসইতে আজও দরপতন, ১৩ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন Nov 10, 2025
img
সাতকানিয়ায় বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে প্রাণ গেল ১ জনের Nov 10, 2025
img
চ্যাটজিপিটিতে যুক্ত হলো নতুন ফিচার “পালস” Nov 10, 2025
img
৮ বছর পর ভারত থেকে আপেল আমদানি শুরু Nov 10, 2025
img
আগামী দিনে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে : খায়রুল কবির Nov 10, 2025
img
বাংলাদেশকে হারিয়ে ইতিহাস গড়তে চাই : বালবির্নি Nov 10, 2025