গত মাসে পুতিন নিজেও ভারত সফরের কথা উল্লেখ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ডিসেম্বরের বৈঠকে ‘প্রিয় বন্ধু, আমাদের বিশ্বস্ত অংশীদার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির’ সঙ্গে সাক্ষাতের অপেক্ষায় আছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ বছরের শেষের আগে ভারত সফর করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।
গত মাসে পুতিন নিজেও ভারত সফরের কথা উল্লেখ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ডিসেম্বরের বৈঠকে 'প্রিয় বন্ধু, আমাদের বিশ্বস্ত অংশীদার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির' সঙ্গে সাক্ষাতের অপেক্ষায় আছেন। এছাড়া তিনি বলেছেন, শীর্ষ বৈঠকে ভারত-রাশিয়ার বাণিজ্যের চলমান ভারসাম্যহীনতা নিয়ে আলোচনা হবে।
সোমবার সাংবাদিকদের পেসকভ বলেন, 'বছরের শেষে নির্ধারিত পুতিনের ভারত সফরের জন্য আমরা সক্রিয়ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা আশা করি, এটা অর্থবহ সফর হবে।' তবে তিনি সফরের বিস্তারিত এজেন্ডা প্রকাশ করেননি এবং বলেছেন, 'সময়মতো জানানো হবে।'
তিনি এই মন্তব্য করেন 'ইকোনমিক টাইমস'-এর এক প্রতিবেদনের প্রসঙ্গে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া ও ভারত শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা এবং যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিক্স খাতে দক্ষ শ্রমশক্তি নিয়োগ বাড়াতে একটি 'লেবার মোবিলিটি' চুক্তি করতে যাচ্ছে।
মস্কো ও নয়াদিল্লির দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ভারত রুশ তেলের বড় ক্রেতা হওয়া সত্ত্বেও, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পশ্চিমাদের চাপের মুখে পড়েছে। অক্টোবরের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বৃহত্তম দুই তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুকওয়েল-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
এর আগে ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। তার অভিযোগ ছিল, ভারত রাশিয়ার তেল কিনে 'ইউক্রেন যুদ্ধকে অর্থ জোগাচ্ছে'।
ভারতীয় কর্মকর্তারা এই সমালোচনাকে গুরুত্ব দেননি। তাদের বক্তব্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনও রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। নয়াদিল্লি বলছে, তাদের জ্বালানি নীতি 'জাতীয় স্বার্থ'-নির্ভর এবং ভারত 'একতরফা কোনো নিষেধাজ্ঞা মানে না'।
কিছু রিফাইনারি নতুন অর্ডার স্থগিত করলেও অন্যরা [রাষ্ট্রায়ত্ত ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনসহ] জানিয়েছে, তারা নিষিদ্ধ নয় এমন রুশ সরবরাহকারীদের কাছ থেকে তেল ক্রয় চালিয়ে যাবে।
ডেটা প্রতিষ্ঠান কেপলারের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে ভারতে অপরিশোধিত রুশ তেলের আমদানি বেড়ে প্রতিদিন ১.৪৮ মিলিয়ন ব্যারেল হয়েছে, যা সেপ্টেম্বরের ১.৪৪ মিলিয়ন ব্যারেল থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে অন্য খাতের বাণিজ্যও বাড়ছে। ভারতে রাশিয়ার হীরার রপ্তানি দ্বিগুণ হয়ে ১.৩১ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। দুই দেশ আরও গভীর সামরিক সহযোগিতার পরিকল্পনা করেছে- বিশেষ করে বিমান, নৌ ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে। গত মাসে তারা ১৪তম 'ইন্দ্র' নৌ মহড়া করেছে- আধুনিক যুদ্ধের সমন্বয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে।
কেএন/টিকে