ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা-মিরপুর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ব্যারিষ্টার রাগীব রউফ চৌধুরী আওয়ামী লীগ নেতার কবর জিয়ারত করেছেন অভিযোগ উঠেছে। এমন ঘটনায় স্থানীয়ও রাজনৈতিক অঙ্গনে নানান আলোচনা সমালোচনা চলছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) নির্বাচনী প্রচারণায় ভেড়ামারা উপজেলায় যান ব্যারিষ্টার রাগীব রউফ চৌধুরী। এসময় বেলা ১১টায় বাহাদুরপুর ইউনিয়নের বিজেএম ডিগ্রী কলেজে শিক্ষার মানউন্নয়নে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে যোগ দেওয়ার আগে তিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি প্রায়ত আব্দুর রাজ্জাকের কবর জিয়ারত করেন। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শাহজাহান আলীসহ বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এরপর থেকেই স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।
এ বিষয়ে প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতার ছেলে ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ যুগ্ন সাধারন সম্পাদক সোহেল রানা পবন বলেন, তিনি (রাগীব রউফ চৌধুরী) আমার বাবার কবর জিয়ারত করেছেন এটা সত্য। তার সাথে আমার দুই ভাই কাজ করে। তবে সে সময় আমরা কেউ উপস্থিত ছিলাম না। তিনি সৌজন্যতামূলকভাবে কবর জিয়ারত করেছেন।
ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এ্যাড. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, যার কবর জিয়ারত করেছেন তিনি (আব্দুর রাজ্জাক) ফ্যাসিবাদের দোসর, আওয়ামীলীগ নেতা। তিনি আগে জাতীয় পার্টি করতেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগে যোগদান করার পরে মৃত্যুবরণ করেন। তার বড় ছেলে উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক ও বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
তার এক ছেলে সদ্য সাবেক ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। আরেক ছেলে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা। আমি মনে করি বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর আওয়ামীলীগ নেতার কবর জিয়ারত করে নির্বাচনী কর্মকান্ড পরিচালনা করা শোভনীয় নয়। মানুষ এটাকে খারাপ বলছে।
এছাড়াও তিনি যদি এটা সৌজন্যতামূলক ভাবেই করে থাকেন তাহলে তার পাশেই বাহাদুরপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বানাত আলীর কবর ছিল। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ওই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তার কবরতো রাগীব সাহেব সৌজন্যতামুলক জিয়ারত করতে যান নি? তাহলে আমরা কী ধরে নেব?।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী বলেন, তিনি (আব্দুর রাজ্জাক) আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন এটা আমার জানা ছিল না। আমি যতদুর জানি শুরু থেকেই তিনি জাতীয় পার্টি করতেন। জাতীয় পার্টি থেকেই তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে তিনি বারবার বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। তাছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। সুতরাং সেই আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ নয়। এসব বিষয়ে প্রপাগন্ডা ছড়ানো হচ্ছে। তাছাড়াও আমি যে কলেজে প্রোগ্রামে গেছিলাম তিনি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। সেই সৌজন্যতার দিক থেকে তার কবর জিয়ারত করা হয়েছে। এছাড়াও আমার সাথে তার দুই ছেলে কাজ করে। তিনি কখনওই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন না। এ বিষয়ে যারা কথা বলছেন তারা না জেনেই কথা বলছেন।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, এটা কোন ইস্যু নয়। এটা সামাজিক সৌজন্যতা। এটাকে বড় করে দেখার কিছু নেই।
কেএন/টিএ