সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, ‘ড. ইউনূসের ভাষণের পর এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে—জামায়াত ও এনসিপি কী করবে। ড. ইউনূসের ভাষণের বিষয়বস্তুকে সামনে রেখে তারা কি ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন শুরু করবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দল তাদের ক্ষোভ, দুঃখ, হতাশা প্রকাশ করেছে। এনসিপিও বলেছে, আদেশে অস্পষ্টতা রয়েছে।
এই অস্পষ্টতা শেষ পর্যন্ত অর্থহীন হয়েছে। নির্বাচন শুরুর আগে গণভোট বা জুলাই সনদ, আইনি ভিত্তি—এই সমস্ত ইস্যু তেমন গুরুত্ব পায়নি।’
শনিবার (১৫ নভেম্বর) নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘ভয়েস বাংলা’-তে মোস্তফা ফিরোজ এসব কথা বলেন।
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, “গণভোট নিয়ে যে-ই আলোচনা তুঙ্গে উঠল।
ঠিক তখনই বিএনপি একটি কৌশল অবলম্বন করল। দলটি সারা দেশে ২৩৭টি আসনে নমিনেশন ঘোষণা দিল। এই ঘোষণার পর সারা দেশের মানুষের মনোযোগ এখন শুধু ‘কে কোথায় নমিনেশন পেয়েছে, কে পেল না’—এই প্রশ্নে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। জুলাই সনদ বা গণভোটের বিষয়গুলো মানুষের মনে নেই।
ফলে এই ইস্যুগুলো এখন প্রায় অগ্রাহ্য হয়ে গেছে।”
তিনি আরো বলেন, ‘জামায়াত যখন গণভোট ইস্যুতে মাঠে নামল এর মধ্যে আবার শুরু হয়ে গেল শেখ হাসিনার বিচার এবং আওয়ামী লীগের কর্মসূচি। ফলে গণভোটের ইস্যুটা আরো ভাটা পড়ল এবং শেষমেশ ড. ইউনূসের ভাষণে জামায়াতসহ অন্যান্য দলের আশা নৈরাশ্য হয়ে গেল।’
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘বর্তমানে জামায়াত এবং এনসিপি অনেকটাই দিশাহারা হয়ে গেছে। তারা বুঝতে পারছে, ড. ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি আন্দোলন করা সম্ভব নয়।
ফলে এখন জামায়াত ও এনসিপি এক ধরনের রাগ, দুঃখ এবং হতাশা প্রকাশ করছে।’
মোস্তফা ফিরোজ মনে করেন, ‘এনসিপি এখন আরো ব্যাকফুটে চলে গেছে। কারণ জুলাই সনদের গ্যাজেটটি রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে জারি হয়েছে, আইনি ভিত্তি এখানে নেই। তারা (এনসিপি) স্বাক্ষরও করেনি। এখন সব কিছু হওয়ার পর স্বাক্ষর করাটাও হাস্যকর হবে-গ্যাজেট তো হয়ে গেছে। তাই তাদের স্বাক্ষর করা অর্থহীন।’
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, “কিছু নেতা এনসিপি নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছেন, যা এনসিপির ভাবমূর্তির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। পাশাপাশি ছড়াচ্ছে কিছু চটং-চটং কথাবার্তা, যার মধ্যে বলা হচ্ছে, ‘১০০ বছরেও বিএনপি গণভোট ঠেকাতে পারবে না’ এটি বলেছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। বাস্তবে বিএনপি গণভোট ঠেকায়নি, এমনিই থেমে গেছে। এ ছাড়া এনসিপি নেতা আখতারের বিরুদ্ধে পিপি নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫০ লাখ টাকার অভিযোগও সামনে এসেছে। এখন জামায়াত এবং এনসিপি নিজেদের ঘর সামলাবে নাকি জুলাই সনদ নিয়ে বাড়াবাড়ি করবে-এটিই এখন বড় প্রশ্ন।’
এবি/টিকে