মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়কে স্বাগত জানিয়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার শুরু করার দাবি জানিয়েছে এনসিপি। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘রায় দ্রুত কার্যকর করতে হবে। অবিলম্বে দিল্লি থেকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা শুনেছি অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ভারত যাচ্ছেন। আশা করি, তিনি শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে ফিরবেন। আগামী এক মাসের মধ্যে তাকে দেশে এনে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু শেখ হাসিনা নয়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে অপরাধে জড়িত সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যারা কারাগারে আছে, তাদের মামলার রায়ও দ্রুত দিতে হবে। এটা শুধু রাজনৈতিক দলের দাবি নয়; জুলাই-আগস্টের ভুক্তভোগীদেরও দাবি।’ আওয়ামী লীগের দায়ের বিষয়টি উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ‘রায়ের মধ্য দিয়ে পরিষ্কার হয়েছে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গণহত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী ছিলেন। ফলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত।
দলের বিচার শুরু করতে হবে।’ জুলাই বিপ্লবের প্রসঙ্গ টেনে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, ‘১৬ জুলাই আবু সাঈদকে হত্যার পর আমরা শপথ নিয়েছিলাম বিচার আদায় করেই ছাড়ব। জুলাই বিপ্লবে হাজার শহীদ ও আহতদের ওপর যে জুলুম হয়েছে, তার বিচার আজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এই রায় বাংলাদেশের বিচারিক ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে। তবে আমরা সন্তুষ্ট হবো সেদিনই, যেদিন রায় কার্যকর হবে। সেদিনই শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মুজাহিদ, যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল-আমিন, মুশফিক উস সালেহীন, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক আহসানসহ অন্য নেতারা।
এর আগে সোমবার বিকেলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর দুই আসামির মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এসএস/এসএন