তারা বাংলাদেশ থেকে কাপুরুষের মতো পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে: মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘পতিত হাসিনা সরকার গুম, খুন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশের ১৮ কোট মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের লোকও ছিল। তারা তাদের দলের লোকদেরও রক্ষা করেনি। এই কথা বলার কারণ হচ্ছে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় শুধুমাত্র নিজ এবং পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেছেন, তার দলের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেননি।

শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা সদরে কচুয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে উপজেলা এবং পৌর বিএনপির আয়োজনে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় বড় বড় কথা বলে। কিন্তু তাদের দলের নাম উর্দুতে কেন রেখেছিল। আওয়ামী লীগ মানে হচ্ছে জনগণ। তারা জনগণের জন্য কী করেছে। আজকে বাংলাদেশের মানুষকে সেই প্রশ্ন করতে হবে। এই প্রশ্ন শুধু বিএনপির সমর্থকদের জন্য নয়, এটি আওয়ামী লীগ যারা করে তাদের জন্যও প্রশ্ন। তারা আওয়ামী লীগের জন্যও কিছু করেনি। এসব কারণে তারা বাংলাদেশ থেকে কাপুরুষের মত পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদেরকে স্বাধীনতার পক্ষের দাবি করলেও ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তারা দেশ থেকে পালিয়েছে। ওই সময় নিজ পরিবারকে দুরে ঠেলে দিয়ে এই দেশের মানুষের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তখন তিনি পাকিস্তান আর্মির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। তিনি কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে গিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে বুঝতে হবে কারা এই দেশকে ভালোবাসে এবং এই দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শুধুমাত্র স্বাধীনতার ঘোষণাই দেননি বরং তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে মোকাবেলা করার জন্য সম্মুখ সমরে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। যে কারণে এই দেশের মানুষ তাকে সম্মান জানিয়ে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করেছিলেন।

মঈন খান বলেন, আজকের সমাবেশে যারা উপস্থিত হয়েছেন, তারা ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম, নির্যাতন, গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। এই সময়টাতে তারা ধানের শীষের পক্ষে থেকে সকল কিছু মোকাবিলা করেছেন।

তিনি বলেন, আজকে আমরা যে সমাবেশে এসেছি সেটি হচ্ছে আপনাদের সন্তান আ ন ম এহসানুল হক মিলনের। আমি অনেক আগ থেকেই তাকে চিনি ও জানি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাকে ধানের শীষের জন্য মনোনীত করেছেন। যার কারণে আপনাদের সামনে দলের পক্ষ হয়ে তার হাতে ধানের শীষ তুলে দিলাম। আপনারা এই আসনটি তারেক রহমানকে উপহার দিবেন।

প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে বিএনপি থেকে মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আ ন ম এহসানুল হক মিলন।

কচুয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. খায়রুল আবেদীন স্বপনের সভাপতিত্বে ও উপজেলা বিএনপির সমন্বয়ক শাহজালাল প্রধান জালালের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজমুন নাহার বেবী, ইসলামী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের গভর্নর অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ নেসারুল হক ও ওলামা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাওলানা কাজী আবুল হোসেন।
জনসভায় উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপি এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আমার বাবা ও মা অসমের বড় সঙ্গীতশিল্পী ছিলেন: পাপন Nov 23, 2025
img
বায়োপিক একেবারেই পছন্দ করি না: আবির চ্যাটার্জি Nov 23, 2025
img
রৌমারী শুল্ক স্থলবন্দরে পাথরবোঝাই ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ Nov 23, 2025
img
একসময় বাড়ি ভাড়া চোকানোর মতো ক্ষমতাও আমার ছিল না: কার্তিক আরিয়ান Nov 23, 2025
img
সাবেক এমপি এসএ খালেকের ছেলে সাজুকে বিএনপির শোকজ Nov 23, 2025
img
ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এনসিপি নেতাদের সাক্ষাৎ Nov 23, 2025
img
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্লট জালিয়াতির মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন আজ Nov 23, 2025
img
ত্রিদেশীয় সিরিজে মাঠে নামছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল Nov 23, 2025
img
তাইজুলের মাইলফলকে উচ্ছ্বসিত সাকিব আল হাসান, শুভকামনায় ৪০০ উইকেট Nov 23, 2025
img
সশরীরে নয়, গুমের মামলায় ভার্চুয়ালি হাজিরা দিতে চান সেনা কর্মকর্তারা Nov 23, 2025
img

মন্ত্রী স্টিভেন সিম

‘শ্রমিক শোষণের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি’ Nov 23, 2025
img
দেবের সঙ্গে রোম্যান্স হবে, ভাবতেও পারিনি: জ্যোতির্ময়ী Nov 23, 2025
img
অডিয়েন্সকে দেখলে অন্য কোনো চিন্তা আর মাথায় থাকে না: জোজো Nov 23, 2025
img
পরবর্তী ম্যাচ থেকেই ঘুরে দাঁড়াবে রিয়াল মাদ্রিদ, বিশ্বাস আলোনসোর Nov 23, 2025
img
ইংল্যান্ডে প্রথমবারের মতো রেলভাড়া না বাড়ানোর ঘোষণা Nov 23, 2025
img

প্রধান বিচারপতি

বিচার বিভাগ ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র ব্যর্থ হয় Nov 23, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারির পর এবার ভেনেজুয়েলায় ফ্লাইট বাতিলের হিড়িক Nov 23, 2025
img
ভেনেজুয়েলায় নতুন ধাপে অভিযান শুরুর পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের Nov 23, 2025
img
ভোট গণনা ও ফলাফল পর্যন্ত মাঠে থাকবে যুবদল: মোনায়েম মুন্না Nov 23, 2025
img
লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট বলে কিছু নেই: রণজয় বিষ্ণু Nov 23, 2025