অন্যান্য মৌসুমের তুলনায় শীতকালে আইসক্রিম খাওয়ার চল কিছুটা কম। কিন্তু অনেকের কাছেই এটি অভ্যাসের মতো, যতই ঠাণ্ডা পড়ুক, আইসক্রিম চাই-ই চাই। তবে অনেকেই মনে করেন, ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ঠাণ্ডা খাবার খেলে সর্দি-কাশি বাড়ে। এই ধারণা কি সত্যি?
শীতকালে আইসক্রিম খাওয়া কি স্বাস্থ্যের জন্য সত্যিই ক্ষতিকর, নাকি এটি শুধুই একটি প্রচলিত ধারণা।
চলুন, জেনে নেওয়া যাক বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে কী বলছেন।
আইসক্রিম কি সত্যিই ঠাণ্ডা লাগায় : বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইসক্রিম খাওয়া নিয়ে প্রচলিত ধারণাটি আংশিক সত্য। আইসক্রিম নিজে থেকেই সর্দি-কাশির কারণ নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি উপসর্গ বাড়িয়ে দিতে পারে।
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ : ঠাণ্ডা খাবার পেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত সেই খাবারকে উষ্ণ করে তোলে। ফলে আইসক্রিম খেলে ভেতরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে কমে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
সরাসরি কারণ নয় : সর্দি বা ফ্লু হয় ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার কারণে, ঠান্ডা খাবারের কারণে নয়। তাই সুস্থ অবস্থায় আইসক্রিম খেলে অসুস্থ হওয়ার ভয় নেই।
মন ভালো করা খাবার : আইসক্রিম একটি ‘কমফোর্ট ফুড’, যা স্ট্রেস কমায় এবং মেজাজ ফুরফুরে রাখে। তাই যে মৌসুমই হোক না কেন, অনেকে এটি খাওয়া পছন্দ করেন।
যাদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন
গলায় অস্বস্তি
যদি কারো গলায় ইতিমধ্যে ব্যথা হয় বা সংবেদনশীল থাকে, তবে খুব ঠাণ্ডা খাবার সেই অস্বস্তি আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। ঠাণ্ডা গলার টিস্যুকে উত্তেজিত করে।
কফ জমে থাকলে
যাদের অ্যাজমা বা কফের প্রবণতা আছে, তাদের ক্ষেত্রে ঠাণ্ডা খাবার বা মিষ্টিজাতীয় খাবার সাময়িকভাবে কফ বা শ্লেষ্মা উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে পারে।
আর্দ্রতার অভাব
শীতকালে আইসক্রিম খাওয়ার পরে তাৎক্ষণিক আরাম পেলেও, এটি মুখ ও গলার ভেতরের অংশকে শুষ্ক করে দিতে পারে, যা ঠাণ্ডা লাগার প্রবণতা বাড়ায়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একজন সুস্থ মানুষের জন্য শীতকালে পরিমিত পরিমাণে আইসক্রিম খাওয়া নিরাপদ। কিন্তু আপনার যদি সর্দি, কাশি বা গলা ব্যথার মতো কোনো উপসর্গ থাকে, তবে সেই সময় আইসক্রিম এড়িয়ে চলা বুদ্ধিমানের কাজ।
শীতে আইসক্রিম খাওয়ার টিপস
পরিমিত খান : সপ্তাহে ১ থেকে ২ বারের বেশি না খাওয়াই ভালো।
দ্রুত খাবেন না : আইসক্রিম ধীরে ধীরে এবং ছোট চামচে খান, যাতে এটি আপনার মুখ ও গলায় হঠাৎ ঠাণ্ডা প্রভাব না ফেলে।
সুস্থ থাকাকালীন খান : অসুস্থ বা গলায় অস্বস্তি থাকলে এটি এড়িয়ে চলুন।
পানি পান : আইসক্রিম খাওয়ার পর হালকা গরম পানি বা উষ্ণ গরম দুধ পান করুন। এতে মুখের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হবে।
এমকে/এসএন