নবাব পরিবারের উদ্যোগে গড়ে উঠে বাংলার প্রথম চিড়িয়াখানা

উনবিংশ শতাব্দীর আগে বাংলায় আধুনিক কোনো চিড়িয়াখানা গড়ে উঠেনি। তবে খ্রিস্টীয় ১৫ শতকে বাংলায় বিভিন্ন স্থানে যে চিড়িয়াখানা ছিলো, তার প্রমাণ পাওয়া যায় সিরাতুল মুতাখখেরিন নামের প্রাচীন ফরাসী গ্রন্থে।

এই গ্রন্থের বিবরণ অনুযায়ী বাংলার নবাব মির কাশিম (রাজত্বকাল ১৭৬০-১৭৬৪) বাংলার বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত পশুপাখির সংগ্রহশালার জন্য সরকারি বরাদ্দ বাতিল করেছিলেন। তাতে বোঝা যায় যে, তারও আগে থেকে বাংলাদেশের অনেক জেলাতেই চিড়িয়াখানা ছিলো।

তবে বাংলার প্রথম আধুনিক চিড়িয়াখাটি গড়ে উঠেছিলো ঢাকার নবাব পরিবারের উদ্যোগে। গণি মিয়া নামে খ্যাত নবাব আব্দুল গণি ছিলেন এ চিড়িয়াখানার প্রতিষ্ঠাতা।

১৮৭৩ সালে এর গঠন শুরু হয় এবং সে দশকের শুরুতেই এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছিলো। সেকালের শাহবাগ এলাকায় গড়ে উঠেছিলো এটি। এ এলাকায় তখন নবাব পরিবারের বাগান বাড়ি ছিলো। বাগ, সিংহ, গন্ডার, ভালুক, উটপাখি, হরিণ প্রভৃতি পশুর জন্য ছিলো আলাদা আলাদা খাঁচা।

এছাড়া এতে চৌবাচ্চায় ছিলো হরেক রকম সাপ এবং মজবুত খাঁচাসমূহে ছিল হরেক রকম পাখি। এ চিড়িয়াখানায় দর্শকদের জন্য কোনো প্রবেশ মূল্য লাগতো না।

১৯৬৪ সালে ঢাকার মিরপুরে পরিকল্পনা অনুযায়ী চিড়িয়াখানা গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। যার নাম ছিল ঢাকা চিড়িয়াখানা। এটি উদ্বোধন ও সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয় ১৯৭৪ সালের ২৩ জুন। ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি নাম পরিবর্তন করে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা নামকরণ করা হয়। এটিই দেশের প্রথম এবং জাতীয় চিড়িয়াখানা। বছরে প্রায় ৩০ লাখ দর্শনার্থী এই চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে থাকেন।

এ চিড়িয়াখানার আয়তন প্রায় ৭৫ হেক্টর। চিড়িয়াখানার চত্বরে ১৩ হেক্টরের দুটি লেক রয়েছে। প্রাণী বৈচিত্র্য চিড়িয়াখানা তথ্য কেন্দ্র হতে প্রাপ্ত তথ্য হতে জানা যায়, বর্তমানে ঢাকা চিড়িয়াখানায় ১৯১ প্রজাতির ২১৫০টি প্রাণী রয়েছে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: