জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান বলেছেন, জুলাই সনদে ৮৪টা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ৮৪টা সংস্কার প্রস্তাবে ১৯টার মধ্যে নোট অফ ডিসেন্ট দিয়েছে বিএনপি। অর্থাৎ, ২৫ পার্সেন্ট বিষয়ে তাদের নোট অফ ডিসেন্ট। এখান থেকেই বোঝা যায়, বিএনপি নতুন করে স্বৈরাচার হতে চায়, তারা সংস্কার মানে না। যারা নতুন বাংলাদেশের সংস্কার মানে না, তাদের আমরা লাল কার্ড দেখাবো, ইনশাল্লাহ।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর শিববাড়ী বাবরী চত্বরে জামায়াতে ইসলামীসহ আন্দোলনরত ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মো. রেজাউল করীম। প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
খুলনায় আইনশৃঙ্খলা অবনতি বিষয়ে সমাবেশ রাশেদ প্রধান বলেন, এই খুলনা মহানগরীতে ২০২৪ সালে ১১টি খুন হয়েছিল। ২০২৫ সালের ১১ মাসে ফ্যাসিস্ট হাসিনামুক্ত বাংলাদেশে তার তিনগুণ ৩৪টা খুন হয়েছে। গতকাল (রোববার) আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে ডাবল মার্ডারের খবর পেয়েছি।
তিনি বলেন, এই প্রশাসন, এই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে, জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে সেটা বাংলাদেশের কোনো পাগলও বিশ্বাস করে না। স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই জাতীয় নির্বাচন আমরা সঠিক সময়ে চাই। কিন্তু তার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের দিনে ওই লোক দেখানো গণভোট আমরা মানি না এবং মেনে নেব না।
গণভোটকে জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে আয়োজন করতে হবে। গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, একইভাবে ওই গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বৈধতাকারী জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
রাশেদ প্রধান বলেন, গতকাল স্বাধীন কমিশন পিলখানা হত্যাকাণ্ডের রিপোর্ট দিয়েছে। সেই রিপোর্টে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগ এবং ভারত দায়ী।
আমার রিপোর্টটা দেখে ভালো লেগেছে। কারণ পিলখানা গণহত্যার পর সর্বপ্রথম আমার মরহুম পিতা শফিউল আলম প্রধান বলেছিলেন, এটা বিডিআর বিদ্রোহ নয়, এটা পরিকল্পিত ঘটনা।
এর পেছনে ভারত রয়েছে, শেখ হাসিনা রয়েছে। সেটা প্রমাণ হয়েছে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট বাংলার জনগণ জানিয়ে দিয়েছে, বাংলার মাটিতে হিন্দুস্তানের আধিপাত্যবাদ এবং আগ্রাসন চলবে না। আল্লাহ ব্যতীত কারও সামনে মাথানত করতে চাই না। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ওই পুরাতন আওয়ামী লীগ আর নতুন বিএনপি যদি হিন্দুস্তানের সঙ্গে কারসাজি করতে চাই, তলে তলে গোপন বৈঠক করতে চাই বাংলাদেশের জনগণ আর নতুন করে স্বৈরাচার, চাঁদাবাজকে মেনে নেবে না।
জাগপার সহ-সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ যেভাবে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, বিএনপিকে বলতে চাই জনতার কাতারে আসুন। না হলে আপনাদেরও পালিয়ে যেতে হবে দেশ ছেড়ে।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুফতি মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদেক হক্কানী, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি-বিডিপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল আউয়াল ও মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আজাদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, খেলাফত মজলিস কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন প্রমুখ।
পিএ/টিএ