স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা চিনিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ শরীরে নেতিবাচক প্রভাবের জন্য চিনির কুখ্যাতি রয়েছে। যদিও পুরোপুরি চিনি বর্জন করা কঠিন, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি এখন সময়ের দাবি।
আপনি যদি মিষ্টি কিছু খাওয়ার জন্য খুব আকাঙ্ক্ষা বোধ করেন, তবে এর জন্য অনেকগুলি স্বাস্থ্যকর বিকল্প রয়েছে।
আসুন জেনে নিই, চিনি খাওয়া কমালে কী কী স্বাস্থ্য উপকার পাওয়া যায়-
ত্বকের তারুণ্য
কেউ অকালে বৃদ্ধ হতে চায় না। বার্ধক্যের একটি বড় প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বকের ওপর। চিনিযুক্ত খাবার গ্রহণ কমানোর মধ্য দিয়ে প্রাকৃতিকভাবে আপনি আপনার ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, চিনির অণুগুলি শরীরে প্রবেশ করে, তারপরে কোলাজেনকে জমাট বাঁধায় এবং বিকৃত করে। কোলাজেন একটি স্ট্রাকচারাল প্রোটিন, যা ত্বককে তার তারুণ্য দান করে। এছাড়াও, কম চিনি খেলে রক্তে ইনসুলিন স্পাইক হ্রাস হওয়ার মাধ্যমে ত্বকে প্রদাহ হ্রাস হয়।
ফুরফুরে মেজাজ
চিনি কখনো কখনো সরাসরি মেজাজের ওপর প্রভাব ফেলে। খুব বেশি চিনিযুক্ত খাবার গ্রহণ হতাশার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনি মস্তিষ্কের ক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে এবং আপনার মেজাজকে পরিবর্তন করতে পারে। আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনের মতে, যেসব নারী বেশি পরিমাণে চিনি গ্রহণ করেন তারা অন্যদের তুলনায় বেশি হতাশায় ভোগেন।
দুর্গন্ধমুক্ত নিঃশ্বাস আর উন্নত হাসি
মিষ্টি আপনার দাঁতের ক্ষতি সাধনের মধ্য দিয়ে আপনার হাসির সৌন্দর্য নষ্ট করতে পারে। আমরা সবাই জানি, চিনিযুক্ত খাবার দাঁতে গহ্বর সৃষ্টি করে, যা সামগ্রিক দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আসলে, চিনি মুখের ব্যাকটেরিয়াগুলি সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে, ফলে দাঁত ক্ষয় হয় এবং মুখে দুর্গন্ধ হয়। আপনি যখন চিনি খাওয়া বন্ধ করবেন, আপনি এই সমস্যাগুলি থেকেও মুক্তি পাবেন।
ওজন কমানো
আপনি যে অতিরিক্ত ওজন হ্রাস করার চেষ্টা করছেন, এটি সম্ভব হবে একবারে চিনি খাওয়া বন্ধ করে দিলে। যদিও চিনি আসক্তি সৃষ্টি করে, তবে আমরা যখন আমাদের সেবন মাত্রা হ্রাস করি তখন আমাদের আসক্তিও হ্রাস পায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বেশি পরিমাণে চিনি গ্রহণ করলে আমাদের লেপটিন প্রতিরোধী করে তুলতে পারে। লেপটিন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন, যা শরীরকে জানান দেয় যে কখন খাওয়া বন্ধ করতে হবে। দেহ লেপটিন প্রতিরোধী হলে আমাদের খাওয়ার মাত্র বেড়ে যায়, সেই সঙ্গে ওজনও বৃদ্ধি পায়।
উন্নত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
চিনি দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল করে দেয়। ফলে আপনি সহজেই ঠাণ্ডা এবং ফ্লুতে আক্রান্ত হতে পারেন। আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনের মতে, যে কোনো ভাবে ১০০ গ্রাম চিনি খেলে শ্বেত রক্তকণিকার ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি ৫০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
টাইমস/এনজে/জিএস