বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তিন শিক্ষককে বরখাস্ত, দুই শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল ও একজনকে আজীবনসহ তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৫৪৪তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকরা হলেন ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অনীক কৃষ্ণ কর্মকার, পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার, ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ।
অন্যদিকে শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পরিচয় বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অনীক কৃষ্ণ কর্মকারকে ৩ বছরের জন্য সাময়িক বরখাস্ত ও ১০ বছর পরীক্ষাসংক্রান্ত কাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার ও ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া দুই শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল, এক শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও দুই শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
সিন্ডিকেটের তারিখ থেকে উল্লিখিত সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
জানা গেছে, সহযোগী অধ্যাপক অনীক কৃষ্ণ কর্মকার বিরুদ্ধে শিক্ষক হওয়ার জন্য আবেদন যোগ্যতার ফলাফল না থাকা, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশিক্ষকসুলভ আচরণ ও শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়াসহ নানান অভিযোগে গত বছরের অক্টোবরের দিকে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিষয়টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। পরে তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তাকে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক প্রভাস কুমার কর্মকারের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে নিজের ব্যক্তিগত কক্ষে ডেকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে চলতি বছরের আগস্টের শুরুর দিকে। পরে এ ঘটনার পর সুষ্ঠু বিচার চেয়ে ১৩ আগস্ট ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বিভাগের সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন এবং ওই সময় ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন।
গত ১১ মে ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হেদায়েত উল্লাহ এবং একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ৩০৭ নম্বর কক্ষে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে আটক করা হয়। এ ঘটনার তদন্তে একটি উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এ শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এবি/টিকে