অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে রিট খারিজের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আদেশ দেবেন সর্বোচ্চ আদালত।
গতকাল বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়। আদালতে লিভ টু আপিলের পক্ষে আবেদনকারী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ নিজেই শুনানি করেন।
ইন্টারভেনর (পক্ষ) হিসেবে লিভ টু আপিলে যুক্ত হন লেখক ফিরোজ আহমেদ। তাঁর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া। নওগাঁর বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন ইন্টারভেনর হন এ মামলায়। তাঁর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এস এম শাহরিয়ার কবির।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ অনীক রুশদ হক। এ ছাড়া ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
তীব্র আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন।
এমন পরিস্থিতিতে ৬ আগস্ট সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চান রাষ্ট্রপ্রধান। এই মতামত চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তত্কালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ৮ আগস্ট মতামত দিলে তার ভিত্তিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে এই মতামত নেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ। রিট আবেদনে বলা হয়, সংবিধানে নেই, এমন বিষয়ে রেফারেন্স (মতামত) চাওয়া যায় না।
তা ছাড়া সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রে আপিল বিভাগকে সুপ্রিম কোর্টের রুলস অনুসরণ করে অ্যাটর্নি জেনারেল ও অন্যদের নোটিশ দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শুনানি করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ নিয়ে শুনানির জন্য নোটিশ দেওয়া হয়নি।
প্রাথমিক শুনানির পর গত ১৩ জানুয়ারি রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ।
পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন মহসিন রশিদ। গত ২ নভেম্বর এই আবেদনে প্রথম শুনানির পর ৬ নভেম্বর ফের শুনানি হয়। এরপর শুনানি মুলতবি ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় গত দুই দিন শুনানির পর আজ আদেশের জন্য রাখেন সর্বোচ্চ আদালত।
এমআর