পিঠ বা কোমর ব্যথার সাত সমাধান

যারা দীর্ঘক্ষণ অফিসে বা দোকানে বসে কাজ করেন, অথচ পিঠ বা কোমর ব্যথায় ভোগেন না আজকাল এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। এটি অন্যতম সাধারণ একটি সমস্যা। হঠাৎ পরিবর্তন, আঘাত, ফোলা এবং মাঝে মাঝে ক্যান্সারের কারণে এমনটি হতে পারে। সাধারণত পিঠের নীচের অংশে ব্যথা হয় এবং সামনে দিকে ঝুঁকলে অবস্থা আরও খারাপের দিকে যায়। এতে করে ওই অংশের পেশী দুর্বল ও স্পর্শকাতর হয়ে উঠতে পারে।

মেরুদণ্ডের স্নায়ুতে চাপ, বয়সের সঙ্গে সম্পর্কিত পরিবর্তন, পায়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রভৃতি কারণে এটি হতে পারে। পিঠ বা কোমর ব্যথা সাধারণত পিছনের পেশীগুলিতে একধরণের টান বা স্ট্রেন নির্দেশ করে। ওই অঞ্চলে প্রায় ২০০টির মতো পেশী রয়েছে, যা খাড়া ভঙ্গিমা বজায় রাখে। ভারী ওজন বহন, কোনো জটিল অবস্থান থেকে ভার উত্তোলন বা পিছনের পেশীগুলিতে অত্যধিক চাপের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

কোমর বা পিঠ ব্যথার কিছু ঘরোয়া প্রতিকার-

আইস প্যাক
বরফ ব্যথা উপশমকারী হিসাবে কাজ করে। আপনি দিনে দুই-তিনবার এটি ব্যবহার করতে পারেন। এমনকি ফোলাভাব হ্রাস করতেও সহায়ক। তোয়ালেতে বরফ জড়িয়ে ব্যথাযুক্ত স্থানে ধরে রাখলে তাৎক্ষনিকভাবে ব্যথা হ্রাস হবে।

সঠিক ভঙ্গিতে বসুন
যেহেতু আমারা দীর্ঘক্ষণ বসে থেকে বিভিন্ন কাজ করি, তাই বসার সঠিক ভঙ্গিটি বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে বসলে পিছনে স্ট্রেনের পরিমাণ হ্রাস হয়। সঠিক ভঙ্গির অর্থ সোজা হয়ে বসা, যাতে মেরুদণ্ডের সমস্ত হাড়গুলি সারিবদ্ধভাবে থাকে এবং আপনার পা ফ্লোরে সমান্তরাল থাকে। এছাড়াও সঠিক ভঙ্গিতে ঘুমানোর অভ্যাস করা উচিত।

নিয়মিত মাসাজ
একটি ভালো মাসাজ কেবল পিঠ বা কোমরের ব্যথা উপশম করতে পারে তা নয় বরং একইসঙ্গে এটি পেশিগুলিকে বেশি সহনশীল করে তোলে। আপনি আরও ভালো ফলাফলের জন্য মাসাজের সময় মলম ব্যবহার করতে পারেন।

রসুন
খালি পেটে প্রতিদিন সকালে দুই থেকে তিন কোয়া রসুন খান। এছাড়া আপনি রসুন তেল দিয়ে আপনার পিঠে ম্যাসেজ করতে পারেন। রসুনের তেল তৈরি করতে কিছুটা নারকেল তেল, সরিষার তেল বা তিলের তেল অল্প আঁচে গরম করুন এবং এতে ৮ থেকে ১০ কোয়া রসুন দিন। রসুন বাদামি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন, তারপর স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ঠাণ্ডা হতে দিন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে এটি দিয়ে আপনার পিঠে আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন। এটি কিছু সময়ের জন্য রেখে দিন এবং তারপরে হালকা গরম জলে স্নান করুন।

নিয়মিত অনুশীলন করুন
কোমর বা পিঠ ব্যথা রোধ করার সর্বোত্তম উপায় হলো পিছনের পেশীগুলির যত্ন নেয়া এবং সর্বোত্তম অবস্থা বজায় রাখা। এর জন্য প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করা প্রয়োজন। স্ট্রেচিং ব্যায়াম পিছনের পেশির জন্য সবচেয়ে ভালো কাজ করে।

গোসলের পানিতে অ্যাপসম লবণ ব্যবহার করুণ
হালকা গরম পানির সঙ্গে একটু অ্যাপসম লবণ মিশিয়ে বাথটাবে বসে থাকলে এটি আপনাকে পিছনের ব্যথা কমাতে সহায়তা করতে পারে। দীর্ঘ সময় কাজ করার পরে এটি আপনাকে স্বস্তি দান করবে। জলের তাপমাত্রা সম্পর্কে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

দুধে হলুদ ও মধু মিশিয়ে পান করুন
দুধে হালকা হলুদ ও মধু মিশিয়ে পান করা পিঠ বা কোমরের ব্যথা নিরাময়ের একটি ঐতিহ্যবাহী উপায়। এটি শরীরে অন্যান্য ব্যথাসহ জয়েন্টের ব্যথাও নিরাময় করতে পারে।

বি.দ্র. যদি আপনার পিঠ বা কোমরের ব্যথা দীর্ঘায়িত হয় এবং সাধারণ ঘরোয়া প্রতিকারগুলি কাজ না করে, তবে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। সূত্র: এনডিটিভি

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: