ঐতিহাসিক বৈশ্বিক ভূমিকা থেকে সরে আসবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শুক্রবার বহু প্রতীক্ষিত একটি নতুন কৌশলপত্রে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তার ঐতিহাসিক বৈশ্বিক ভূমিকা থেকে সরে এসে লাতিন আমেরিকায় আধিপত্য বাড়ানো এবং অভিবাসন কঠোরভাবে দমনে মনোযোগ দেবে।

ট্রাম্পের প্রথাভাঙা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গিকে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করতে প্রণীত এই জাতীয় নিরাপত্তা নথিতে এশিয়ার দিকে পুনরায় মনোযোগ দেওয়ার দীর্ঘদিনের মার্কিন আহ্বান থেকে নাটকীয়ভাবে সরে আসার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, যদিও এতে এখনো চীনকে শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এই কৌশলপত্রে ইউরোপের মিত্রদের তীব্র ভাষায় সমালোচনা করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, অভিবাসনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন-নেতৃত্বাধীন মূল্যবোধের বিরোধীদের যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন জানাবে।

দশকের পর দশক একমাত্র পরাশক্তি হয়ে থাকার প্রচেষ্টা থেকে সরে এসে কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিজের জন্য বৈশ্বিক আধিপত্যের ব্যর্থ ধারণা প্রত্যাখ্যান করে।'

এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র অন্য শক্তিগুলোকে আধিপত্য বিস্তার করতেও বাধা দেবে, তবে যোগ করা হয়, ‘এর অর্থ এই নয় যে বিশ্বের সব মহান ও মধ্যম শক্তির প্রভাব রুখতে অযথা রক্ত ও সম্পদ ক্ষয় করা হবে।’

কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, ‘আমাদের গোলার্ধে জরুরি হুমকি মোকাবিলার জন্য বৈশ্বিক সামরিক উপস্থিতির একটি পুনর্গঠন প্রয়োজন এবং গত কয়েক দশক বা বছরে যেসব অঞ্চলের আপেক্ষিক গুরুত্ব মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কমে গেছে, সেখান থেকে সরে আসতে হবে।’

এই কৌশলপত্রে লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য জোরদারের বিষয়ে দৃঢ় ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে ট্রাম্প প্রশাসন সমুদ্রে কথিত মাদক পাচারকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, ভেনিজুয়েলাসহ বামপন্থী নেতাদের ক্ষমতাচ্যুত করতে হস্তক্ষেপ করেছে এবং পানামা খালের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য প্রকাশ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে।

এই কৌশলপত্রে ট্রাম্পকে দুই শতাব্দী পুরোনো মনরো নীতির আধুনিকায়নকারী হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, যে নীতিতে তৎকালীন নবীন যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকাকে প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তির, তখন ইউরোপের, প্রভাবের বাইরে ঘোষণা করেছিল।

এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা মনরো নীতির ওপর একটি ‘ট্রাম্প অনুসিদ্ধান্ত’ প্রতিষ্ঠা ও কার্যকর করব।’

এমআর/টিকে 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ছাত্রশক্তির নেত্রীকে বিয়ে করলেন হান্নান মাসউদ Dec 05, 2025
img
দেবের ঠিকানা ফাঁস করে দিতে চান জিৎ, কেন? Dec 05, 2025
img

সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম

যারা এতদিন নির্বাচন-নির্বাচন করেছে, তারা এখন ভোট পেছানোর ষড়যন্ত্র করছে Dec 05, 2025
img
জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ১২ দলীয় জোট Dec 05, 2025
img
সৌম্য রায়ের যত্ন ও সম্মান, মৌবনীর জীবনে নতুন ভোর Dec 05, 2025
img
নির্বাচনের তফসিল ও ভোটের তারিখ ঘোষণা নিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়াতে অনুরোধ ইসির Dec 05, 2025
img
আগামী বাংলাদেশ হবে তরুণদের স্বপ্নের : শিবির সভাপতি Dec 05, 2025
img
চট্টগ্রামে অস্ত্রসহ রাশেদ নুরগ্রেপ্তার Dec 05, 2025
img
অর্ধশতাধিক কর্মী নিয়ে বিএনপিতে যোগ দিলেন আ. লীগ নেতা খোকন Dec 05, 2025
img
বন্ধ কলকারখানাগুলো চালুর উদ্যোগ নিয়েছি : শিল্প উপদেষ্টা Dec 05, 2025
img
তারেক রহমান বাংলাদেশের ভোটার কি না, এ প্রশ্ন অবান্তর: অ্যাটর্নি জেনারেল Dec 05, 2025
img
বিএনপি মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে: সালাহউদ্দিন আহমদ Dec 05, 2025
img
এক সপ্তাহ পর শাস্তি পেলেন ফখর জামান Dec 05, 2025
img
নার্সদের ‘ইবাদত হিসেবে সেবা’ করার আহ্বান জামায়াত আমিরের Dec 05, 2025
img
একটি দলের মূল ব্যক্তির সুস্থতার বিষয় আছে, সব দল প্রস্তুত হওয়ার পর তফসিল হোক : নাহিদ ইসলাম Dec 05, 2025
img
বার্ধক্যকে ভয় না পাওয়াই জীবনের সৌন্দর্য: মাধুরী দীক্ষিত Dec 05, 2025
img
হোয়াইট হাউসে বলরুম নির্মাণে নতুন স্থপতি নিয়োগ দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প Dec 05, 2025
img
শরণার্থী-আশ্রয়প্রার্থীদের ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ কমাল যুক্তরাষ্ট্র Dec 05, 2025
img
নামাজ-কুরআন ও দ্বীনের আলোকে চলতে চাই: অভিনেত্রী মৌ খান Dec 05, 2025
img
ভারতমুখী নয়, দেশমুখী রাজনীতি প্রয়োজন : ডাকসু ভিপি Dec 05, 2025