সংখ্যালঘু রাজনীতি জামায়াতের কাছে ব্যবহারযোগ্য প্যাকেজ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেছেন, হঠাৎ করে বহুত্ববাদ আর সংখ্যালঘু রাজনীতি তাদের (জামায়াত) কাছে একটা ব্যবহারযোগ্য প্যাকেজ হয়ে উঠেছে। জামায়াতের সাংগঠনিক নীতিতে প্রার্থী হওয়ার জন্য রুকন হওয়া লাগে। কিন্তু ইসলাম ধর্মাবলম্বী নয়, এমন একজনকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বোঝা যাচ্ছে, দলের ভেতরে বাস্তবতার চাঁদ আদর্শের ওপর চেপে বসেছে।
খুলনা-১ (দাকোপ-বাটিয়াঘাটা) আসনে ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণনন্দীকে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জামায়াতের রাজনীতির নানা দিক তুলে ধরে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক ভিডিওতে এসব কথা বলেন তিনি।
জিল্লুর রহমান বলেন, জামায়াত নেতারা স্বীকার করেছেন- কিছু এলাকায় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও ক্ষুদ্র নির্গোষ্ঠীর প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থাৎ এটি একদিনের চমক নয়, দীর্ঘদিনের একটি কৌশল।
তবে এই কৌশল কতটা টিকবে তা নির্ভর করবে ভোটারদের সংবেদনশীলতার ওপর।
তিনি আরো বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মীয় পরিচয়কে নিজেদের প্রার্থিতার গায়ে লাগিয়ে নেওয়ার একটা চেষ্টা জামায়াত করছে। কৃষ্ণনন্দী নিজেও কোনো হঠাৎ আবির্ভূত চরিত্র নন। স্থানীয় ব্যবসায়ী।
আগে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ নারায়ণচন্দ্র চন্দের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। ২০০৭ সালের পর জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। দীর্ঘদিন ধরে নেতাকর্মীদের সংকটের সময় পাশে থাকার দাবি করছেন। এই পুরো প্রোফাইলটা খুবই সচেতনভাবে তৈরি করা। নতুন মুখ কিন্তু অচেনা নন।
হিন্দু কিন্তু জামায়াতের বছর খানিক পুরনো হিন্দু কমিটির সভাপতি। স্থানীয় আবার কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা মিয়া গোলাম পরোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ আছে।
জিল্লুর রহমান বলেন, সব মিলিয়ে তিনি এক ধরনের ব্রিজ ফিগার। প্রশ্ন হলো এই ব্রিজ আসলে কার কার মধ্যে? হিন্দু ভোটার আর জামায়াতের মধ্যে নাকি জামায়াতের অতীত ইমেজ আর ভবিষ্যৎ ক্ষমতার দর কষাকষির জায়গার মধ্যে?
তিনি বলেন, জামায়াতের ইতিহাস দেখলে প্রথম প্রশ্নের উত্তর তত সহজ হয় না। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ভূমিকা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রশ্নে অতীতের অবস্থান তাদের রাজনৈতিক স্মৃতি থেকে মুছে যায়নি।
পিএ/এসএন