প্রথম মোটরসাইকেল নির্মাণ করেন ডাইমলার ও মেব্যাচ

আঠারো শতকের শেষের দিকে দুই চাকার পেট্রোল চালিত একটি যন্ত্র সবাইকে অবাক করে চলতে থাকে পথে ঘাটে। গতিতে দ্রুত আর আয়তনে ছোট হওয়ায় এর জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে সব জায়গায়। জয় করতে থাকে বিশ্বের সব সড়ক মহাসড়ক।

১৮৯৪ সালে ‘হাইডের্ব্যান্ড অ্যান্ড উলফমুলার’ নামের প্রথম পেট্রোল চালিত বাণিজ্যিক মোটরসাইকেল বাজারে আসে। প্রকৌশলী উলফমুলারের নেতৃত্বে বাষ্প বিজ্ঞানী হেনরিক আর হাইডের্ব্যান্ডের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই মোটরসাইকেল বাজারজাত শুরু হয়।

বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত শুরুর প্রায় ৯ বছর আগেই ১৮৮৫ সালে বিশ্বের প্রথম মোটরসাইকেলটি নির্মাণ করেছিলেন জার্মানির ব্যাড ক্যান্সটাট শহরের উদ্ভাবক গোত্তালিব ডাইমলার (১৮৩৪-১৯০০) এবং প্রকৌশলী উইলহেম মেব্যাচ (১৮৪৬-১৯২৯)।

বহুদিন ধরেই তারা চেষ্টা করছিলেন বাষ্পচালিত একটি বাহন তৈরির। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের সাফল্য হয়ে ধরা দেয় ১৮৮৫ সালের শেষ ভাগে। কাঠের ফ্রেমে ইঞ্জিন বসিয়ে চাকা জুড়ে দিয়ে তৈরি করেন বিশ্বের প্রথম মোটরসাইকেল।

ইঞ্জিনের সঙ্গে ঘড়ির পেন্ডুলামের সাদৃশ্য থাকায় তারা নিজেদের আবিষ্কারের নাম দিয়েছিলেন ‘গ্র্যান্ডফাদার্স ওল্ড ক্লক’ বা দাদার পুরোনো ঘড়ি। সেই মোটরসাইকেলটি প্রথম চালিয়েছিলেন উদ্ভাবক গোত্তালিব ডাইমলারের ছেলে যন্ত্রপ্রকৌশলী পল ডাইমলার (১৮৬৯-১৯৪৫)। তিনি ওই মোটরসাইকেলটি দিয়ে দক্ষিণ জার্মানির কান্সটাট থেকে আন্টারতুরখেইমে গিয়েছিলেন। যার দূরত্ব সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার। আর বাহনটির গতিসীমা ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১ কিলোমিটার। ১৮৮৫ সালের ১০ নভেম্বরের পল ডাইমলারের সেই সংক্ষিপ্ত বাইক চালনাই ইতিহাসের প্রথম মোটরসাইকেল যাত্রা।

মোটরসাইকেল আবিষ্কারের ফলে পুরো পরিবহন ব্যবস্থায় এক নতুন বিপ্লবের সূচনা হয়। গোত্তালিব ডাইমলারদের দেখাদেখি অন্য উদ্ভাবকেরাও মোটরসাইকেল তৈরিতে মনোনিবেশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তৈরি প্রথম মোটরসাইকেলটি বাজারে আসে ১৮৯৪ সালে। যার সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার।

জার্মানদের হাত থেকে বাজারে এলেও কালের পরিক্রমায় মোটরসাইকেলের ব্যবসার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ চলে যায় জাপানের হাতে। বর্তমানে জাপানের সুজুকি, হোন্ডা, কাওয়াসাকি ও মিতসুবিশি- চারটি প্রতিষ্ঠানই মূলত বিশ্বের মোটরসাইকেল ব্যবসার একটা বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ Sep 16, 2025
img
আগস্টে ৪৯ মামলায় জড়িত ৩১১ দুর্নীতিবাজ Sep 15, 2025
img
১৫ কেজির কোরাল মাছ বিক্রি ১৮ হাজারে Sep 15, 2025
img
শ্রীলঙ্কার সামনে হংকংয়ের ১৫০ রানের চ্যালেঞ্জ Sep 15, 2025
img
নিকুঞ্জে নাগরিক জাগরণ: হারানো শান্তি ফিরে পাওয়ার গল্প Sep 15, 2025
img
সুপার ফোরে খেলবে বাংলাদেশ, আত্মবিশ্বাসী কোচ Sep 15, 2025
img
ম্যাচের আগে বাংলাদেশের প্রশংসায় জনাথন ট্রট Sep 15, 2025
img
অসুস্থ অমিতাভকে ২০০ জন ৬০ ব্যাগ রক্ত দিয়েছিলেন Sep 15, 2025
img
অতিরিক্ত ৬ বছরের কারাভোগ শেষে ভারতে ফিরলেন রামাতা Sep 15, 2025
এশিয়া কাপে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, সুপার ফোর নিশ্চিত কার? Sep 15, 2025
img
আলোচনা ভেস্তে দিতেই দোহায় হামলা : কাতারি আমির Sep 15, 2025
img
তিস্তা প্রকল্পে আগ্রহী চীন, পাঠাচ্ছে কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল Sep 15, 2025
img
ভাঙ্গায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, ক্ষতিগ্রস্ত ৮ গাড়ি ও ১৯ মোটরসাইকেল Sep 15, 2025
img

কাতারে হামলা

নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী Sep 15, 2025
img
দেশবাসী আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন : জামায়াত সেক্রেটারি Sep 15, 2025
img
লেভেল ফোর কোচিং শেষ করলেন মঞ্জু Sep 15, 2025
img
ওমানকে হারিয়ে প্রথম জয় আমিরাতের Sep 15, 2025
img
বিসিবি নির্বাচনে খেলোয়াড় প্রতিনিধি চায় কোয়াব! Sep 15, 2025
img
নয় ঘণ্টার ম্যারাথন জেরা শেষে ইডির দপ্তর থেকে বের হলেন মিমি Sep 15, 2025
img
আমরা ১৭ বছর ক্ষমতায় নাই, তবুও মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি: শামা ওবায়েদ Sep 15, 2025