আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়ন আদেশের ওপর গণভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে বিশেষ পরিপত্র জারি করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।
পরিপত্র অনুযায়ী, নির্বাচনে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সশস্ত্র বাহিনী মাঠে থাকবে এবং তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত বিশেষ পরিপত্রটি আজ জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বিশেষ পরিপত্রে জানানো হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী বর্তমানে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় মোতায়েন রয়েছে এবং নির্বাচনের সময়ও এই মোতায়েন অব্যাহত থাকবে। সরকার কর্তৃক সামরিক বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। মূলত নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর করার পূর্বশর্ত হিসেবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পরিপত্রে বিভিন্ন বাহিনীর মোতায়েনের একটি সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে কমিশন। তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনের পরবর্তী ৭ দিন পর্যন্ত সব বাহিনী স্বাভাবিক মোতায়েন থাকবে। আনসার ও ভিডিপি ছাড়া অন্যান্য বাহিনী ভোটের আগে ৩ দিন, ভোটের দিন এবং পরের ১ দিনসহ (মোট ৫ দিন) মোতায়েন থাকবে। তবে এই বাহিনীটি নির্বাচনের সময় মোট ৬ দিন (ভোটের আগে ৪ দিন, ভোটের দিন ও পরের ১ দিন) দায়িত্ব পালন করবে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে টহল ও আভিযানিক দল এবং ভোটের দিন বিশেষ স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বাহিনীগুলো কাজ করবে।
ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি ব্যবহার ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কমিশন বেশ কিছু কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে সিসিটিভি কাভারেজ নিশ্চিত করা হবে।
এছাড়া মাঠে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবহৃত ‘IP Enabled Body Worn’ ক্যামেরার লাইভ ফিড সরাসরি নির্বাচন কমিশনের সমন্বয় সেলে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে ইসি জানায়, নির্বাচনে বিঘ্ন ঘটাতে পারে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনকালীন গুজব এবং অপতথ্য রোধে নির্বাচন কমিশনে একটি বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। বিটিআরসি, মন্ত্রণালয় এবং সব বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত এই সেলটি ১২ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
বিশেষ করে ভোটের ৭ দিন এই সেলটি পূর্ণাঙ্গরূপে কাজ করবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পুরো আইনশৃঙ্খলা পরিকল্পনার ‘লিড মন্ত্রণালয়’ হিসেবে কাজ করবে এবং মাঠ পর্যায়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে।
এমআর/টিকে